আদালত চত্বরের পুলিশ লকআপে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক বিচারাধীন বন্দি। শনিবার দুপুরে কোচবিহার জেলা আদালত চত্বরে এই ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারাধীন ওই বন্দির নাম পিঙ্কু মিঁয়া। বাড়ি দিনহাটায়। এ দিন লকআপের মধ্যে আচমকা নিজের গলা, বুক, ও হাতে ব্লেড চালাতে শুরু করেন তিনি। মূহূর্তের মধ্যে রক্তে ভিজে যায় গোটা শরীর। লকআপে থাকা অন্য বন্দিরা ঘটনার আকস্মিকতায় হতম্ভব হয়ে যান। পুলিশ কর্মীরা বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পরে ওই যুবককে কোনও রকমে নিরস্ত করেন। তড়িঘড়ি রক্তাক্ত ওই যুবককে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সারা শরীরে ৩০টি সেলাই পড়েছে। তাঁর হাতে কী ভাবে ব্লেড পৌঁছালো সে ব্যাপারেও খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “কেন ওই যুবক এমন কাণ্ড করেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে ওই ব্যাপারে এখনও অভিযোগ পাইনি।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে অক্টোবর মাসের পয়লা তারিখ দিনহাটা থানার পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে মাদক বিরোধী আইনে মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতারের পর প্রথমে তাকে দিনহাটা জেলে রাখা হয়। ওই সংক্রান্ত মামলা কোচবিহার জেলা আদালতে চলে বলে পরে তাকে কোচবিহার জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশের দাবি, এ দিন দুপুর নাগাদ শুনানি থাকায় ওই যুবককে কোচবিহার জেল থেকে জেলা আদালত চত্বরের জিআর কোর্ট লকআপে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিচারাধীন ওই বন্দির পরিবারের লোকেরা তার সঙ্গে দেখাও করেন। তার কিছক্ষণের মধ্যে ওই ঘটনা ঘটেছে। নিছক জামিন না মেলায়, না অন্য কোনও পারিবারিক কারণে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সে বিষয়টিও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। কোচবিহার বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল জলিল আহমেদ বলেন, “এনডিপিএস অ্যাক্টের মামলায় অভিযুক্তদের এ দিন শুনানি হওয়ার ব্যাপার ছিল না বলেই জানি। কারণ পুজোর ছুটি চলছে। তারপরেও কেন ওই যুবককে সেখানে নিয়ে যাওয়া হল তা দেখা দরকার।”
একই সঙ্গে লকআপে বন্দির আত্মহত্যার চেষ্টার মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্য পুলিশের বাড়তি সতর্কতার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সুপার ওই ব্যাপারে বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ পেলে তা দেখা হবে। ঘটনার জেরে মুষড়ে পড়েছেন ওই যুবকের স্ত্রী মামনি বিবি। তিনি বলেন, “জেলে থাকায় আমাকে নিয়ে চিন্তায় ছিল। এমন করবে ভাবিনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy