আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেদখল রাস্তা। —সন্দীপ পাল
শহরে রিক্সা, ট্যাক্সি ও টোটো চালকদের দাবি সত্ত্বেও ঠিকঠাক স্ট্যান্ড গড়ে না ওঠায় সমস্যা চলছেই জলপাইগুড়িতে। পুরসভা-প্রশাসনের তরফেও সমস্যার কথা স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু কবে, কী ভাবে তা মিটবে, স্পষ্ট নয়।
১৩৬ বছরের পুরনো এই শহরে পর্যাপ্ত স্ট্যান্ড গড়ে ওঠেনি। যেখানে রিক্সা, টোটো এবং ট্যাক্সি দাঁড়াতে পারে। শহরে অটো রিক্সা চললেও তারা শহরতলির এক প্রান্ত থেকে যাত্রী নিয়ে অন্যত্র যাতায়াত করে। শহরের মধ্যে এবং শহর থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য যে তিনটি যানের স্ট্যান্ড দরকার তা রিক্সা, অটোরিক্সা এবং ট্যাক্সি। রিক্সা এবং টোটো শহরের মধ্যে চলাচল করে। বাসিন্দাদের অধিকাংশই এই যানগুলিতে করে গন্তব্যে যান। শহরের বাইরে যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি ভাড়া করার দরকার।
শহরের কেন্দ্রস্থল, যেমন নেতাজি সুভাষ রোড, ডিবিসি রোড, মার্চেন্ট রোড, তিন নম্বর গুমটি এবং চার নম্বর গুমটি থেকে কদমতলা, পান্ডাপাড়া বউবাজার থেকে কদমতলা এবং কদমতলা থেকে মাসকলাইবাড়ি পর্যন্ত রাস্তার আশপাশে যাঁরা থাকেন তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। তাঁরা সাধারণত, বাড়ি থেকে বার হয়েই রিক্সা বা টোটো পেয়ে যান। রায়কতপাড়া থেকে স্টেশন হয়ে পান্ডাপাড়া বউবাজার এবং কদমতলা হয়ে ৪ নম্বর গুমটি পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের বাসিন্দাদের আরও বেশি সুবিধা ভোগ করেন। কারণ এই রাস্তাগুলিতে অটোরিক্সাও চলে।
স্ট্যান্ডের অভাবে সমস্যায় পড়ছেন শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের ভেতরের অংশের একটা বিরাট সংখ্যক বাসিন্দা। তাঁরা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে শহরের কোথাও যেতে গেলে টোটো, রিক্সা বা অটো রিক্সা কিছুই পাওয়া যায়না। সব থেকে সমস্যা হয় কেউ যখন অসুস্থ হয়ে পড়েন অথবা কেউ যখন ট্রেন বা বাস ধরতে যান তখন। তখন রিক্সা, টোটো বা অটো ধরতে না পারলে তাঁরা অসুবিধায় পড়েন। তাই দাবি উঠেছে পাড়ায় পাড়ায় রিক্সা বা টোটো স্ট্যান্ড গড়ে তোলার। জলপাইগুড়ি পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর প্রমোদ মণ্ডল বলেন, “অবিলম্বে শহরে টোটো স্ট্যান্ড, রিক্সা স্ট্যান্ড তৈরি করা দরকার। শহরে অন্তত পাঁচটি জায়গায় ট্যাক্সি স্ট্যান্ড তৈরি করা জরুরি।”
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “টোটোর কোনও স্ট্যান্ড তৈরি করা হবে না। তারা চলতে চলতে যাত্রী তুলবে এবং নামাবে। কদমতলা বাসস্ট্যান্ডে একটি ট্যাক্সি স্ট্যান্ড আছে। শিরিষতলা এবং স্পোর্টস কমপ্লেক্সে সংলগ্ন এলাকায় আরও দু’টি ট্যাক্সি স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হবে। পাড়ায় পাড়ায় রিক্সা স্ট্যান্ড তৈরির জন্য যদি কাউন্সিলররা জায়গা ঠিক করে প্রস্তাব দেন, তা হলে বিবেচনা করে দেখা হবে।”
জলপাইগুড়ি পুরসভা সূত্রে জানা যায়, জলপাইগুড়ি শহরে পুরসভার নথিভুক্ত ৫ হাজার ২০০ রিক্সা আছে। শহরে এখন পর্যন্ত নথিভুক্ত টোটোর সংখ্য ১৩৩টি। শহরে কোনও রিক্সা স্ট্যান্ড নেই। টোটোদের ঘুরে ঘুরে যাত্রী তোলার কথা বলা হলেও অনেক সময় তাদের দিনবাজার, রায়কতপাড়া, কদমতলা, পান্ডাপাড়া, নেতাজীপাড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
কদমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের কথা বলা হলেও এই বিরাট শহরে আর কোথাও ট্যাক্সিস্ট্যান্ড নেই। স্টেশন এলাকায় ২৮ জন ট্যাক্সি চালক মিলে মাসে ৩০০ টাকা প্রতিটি ট্যাক্সির জন্য পার্কিং ফি দিয়ে ট্যাক্সি রাখেন। স্টেশন এলাকার ট্যাক্সিচালক বাবু মজুমদার, শম্ভু দাস বলেন, “এটা রেলের জায়গা। যে কোনও সময় আমাদের দাঁড়ানো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমরা চাই পুরসভার পক্ষ থেকে শহরে আরও কয়েকটি ট্যাক্সি স্ট্যান্ড তৈরি করে দেওয়া হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy