চা বাগানে ‘এগ্রিকালচারাল ইনকাম ট্যাক্স’-এ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তা আরও এক বছর বাড়াল রাজ্য সরকার। বুধবার রাজ্য বাজেটে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ কথা ঘোষণা করেন। তার জেরে পাহাড় থেকে তরাই, ডুয়ার্সের বাগান মালিকরা খুশি। বাগানের যে পরিস্থিতি, তাতে তাঁরা উপকৃত হবেন বলেই দাবি। যদিও তাঁদের প্রত্যাশা আরও অনেক বেশি ছিল।
এ দিন চন্দ্রিমা জানান, পশ্চিমবঙ্গ চা শিল্পের জন্য পৃথিবী-বিখ্যাত। রাজ্য সরকার এই শিল্পকে সাহায্য করার জন্য আগেই ‘এগ্রিকালচারাল ইনকাম ট্যাক্স’ ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছে। সরকার এই ছাড়ের সুবিধা আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাহাড়ের চা বাগানগুলির সংগঠন ‘দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের’ প্রধান উপদেষ্টা সন্দীপ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘রাজ্যকে ধন্যবাদ। এতে বাগান মালিকেরা উপকৃত হবেন।’’ এ বছর পাহাড়ে এখনও বাগানগুলিতে সে ভাবে পাতা আসেনি। এমন পরিস্থিতিতে নেপাল এবং কেনিয়ার চা অবাধে দেশের বাজারে ঢোকা নিয়ে সমস্যার কথাও জানিয়েছেন মালিকদের অনেক সংগঠন। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র উত্তরবঙ্গের সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘কর ছাড়ের সময়সীমা বাড়ানোয় রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ। তবে বাগানগুলিকে আরও বেশি সাহায্য করা দরকার। নদী সংলগ্ন চা বাগানের জমি ভাঙনের কোপে প্রতি বছর কমছে। সে সব নিয়েও রাজ্যের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’
‘ইন্ডিয়ান টি প্লান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর চেয়ারম্যান শিবকুমার কল্যাণীর মতেও এই ছাড়ে বাগান মালিকেরা উপকৃত হবেন ঠিকই, তবে আরও বড় কিছু প্রকল্প চা শিল্পের জন্য দরকার। তাঁর সংযোজন, ‘‘চা বাগানগুলির পরিস্থিতি খুবই খারাপ। তিন মাস বাগানে পাতা থাকে না। গত বছর এক মাস আগেই উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয় টি বোর্ড। তাতেও লোকসান হয়েছে। তাই আরও কিছু আশা করেছিলাম।’’
ছোট চা বাগানগুলির মালিকদের সংগঠন ‘কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ছাড় এক বছর বাড়ানোয় ভাল হয়েছে। চা শিল্পের উন্নতির জন্য একে বাংলার ফসল বিমা, কৃষি সেচ প্রকল্পের অধীনে আনা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তা না হওয়ায় আশাহত।’’ চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের নেতা জিয়াউল আলমের কথায়, ‘‘আগে থেকেই এই সুযোগ বাগানগুলি পেয়েছে। তবে যে ভাবে চা বাগানের জমি নিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তাতে বাগান থাকবে কি না তা নিয়েও অনেক মালিক চিন্তিত। এ সব ছাড় ঘোষণা করে সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)