Advertisement
১৬ জানুয়ারি ২০২৫

বাগান বন্ধের আশঙ্কায় চা শ্রমিকরা

গত বুধবার রায়পুর চা বাগানের ম্যানেজার চরণপ্রীত কুন্দন চাকরিতে ইস্তাফা দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যান। তারপর থেকেই বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন বাগানের প্রায় ৬৫০ শ্রমিক পরিবার।

চা বাগানে কাজ করছেন শ্রমিকরা। —ফাইল ছবি

চা বাগানে কাজ করছেন শ্রমিকরা। —ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:৫০
Share: Save:

পুজোর মুখে কাজ হারানোর আশঙ্কায় শ্রমিকরা। অভিভাবকহীন রায়পুর চা বাগানে ফের তৈরি হল অচলাবস্থা।

জলপাইগুড়ি শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে রায়পুর চা বাগান। খোলা থাকলেও রুগ্ন তকমা পাওয়া বাগানটি গত চার বছর ধরে ধুকে ধুকে চলছিল। এর মধ্যে গত বুধবার এই চা বাগানের ম্যানেজার চরণপ্রীত কুন্দন চাকরিতে ইস্তাফা দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যান। তারপর থেকেই বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন বাগানের প্রায় ৬৫০ শ্রমিক পরিবার।

এর আগে বাম আমলেও রায়পুর চা বাগানে দীর্ঘ কয়েক বছর অচলাবস্থা ছিল। ২০১৪ সালে জীতবাহন মূণ্ডা-সহ ছ’জন চা শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল অপুষ্টি আর বিনা চিকিৎসার কারণে। ওই বছরই সরকারি উদ্যোগে চেন্নাইয়ের ব্যবসায়ী গুরুশঙ্কর বাগানটি চালানোর দায়িত্ব নেন। যদিও শ্রমিকদের অভিযোগ তাতে লাভ হয়নি। এর মধ্যেই প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা বকেয়া পড়েছে। শ্রমিকদের বাসস্থান থেকে শুরু করে পানীয় জলের ব্যবস্থাও খুব খারাপ। ওই বাগানের শ্রমিক বিতনা ওঁরাও জানিয়েছেন, গত দেড় মাসে তাঁদের তিনটি পাক্ষিক মজুরিও বাকি পড়েছে।

এই অবস্থায় গত বুধবার ম্যানেজার চরণপ্রীত কুন্দন চা বাগান ছাড়েন। স্থানীয় পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, প্রধান হেমব্রমের কাছে তাঁর ইস্তফা চিঠি জমা দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যান। প্রধান হেমব্রম ওই বাগানেরই কর্মী এবং শ্রমিক নেতাও বটে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘প্রবাসী বাগান মালিক গত তিন বছরে একবারও বাগানে পা রাখেননি। ম্যানেজারের মাধ্যমে বাগান চলছিল। এবার তিনি চলে যাওয়া অভিভাবকহীন হয়ে পড়ল বাগানটি।’’

ম্যানেজার চরণপ্রীত কুন্দনের বক্তব্য, মালিক বাগানে আসেন না। শ্রমিকদের মজুরি, পিএফ-এর বকেয়া রয়েছে। গত এক মাসে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তাঁকে দু’বার ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। নিজের নিরাপত্তার খাতিরেই তিনি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মালিকের কাছে তিনি আগেই ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ফোনে বাগান মালিক গুরুশঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই মুহূর্তে অসুস্থ এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে বাগানের বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাননি তিনি।

গত ১১ অগস্ট জেলা প্রশাসনের তরফে একটি সরকারি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল এই রুগ্ন বাগানে। সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণ, জেলাশাসক শিল্পা গৌরিসারিয়া- সহ একাধিক প্রশাসনিক কর্তারা সেদিন উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। তাঁরা কথা দিয়েছিলেন দ্রুত বাগান মালিকের সঙ্গে কথা বলে বকেয়া মেটানো ও বাগানটি ভালভাবে চালু করা যায় তার ব্যবস্থা করবেন। খোলার বদলে বাগান প্রায় বন্ধের মুখে এসে দাঁড়াল। সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণ জানিয়েছেন, তিনি জেলা শাসকের সঙ্গে আলোচনা করে, বাগান খোলার ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ করবেন।

শ্রম দফতর থেকে বাগান নিয়ে সমাধানসূত্র বের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী ১৮ অগস্ট জলপাইগুড়ি উপ শ্রম আধিকারিকের দফতরে এই বাগান নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। এখন এই বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন শ্রমিকরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Garden Jalpaiguri Raipur Closed Fear Labour
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy