এক সময় জাল টাকা ছড়িয়ে পড়েছিল চার দিকে। মাঝেমধ্যেই কোথাও না কোথাও জাল টাকার হদিশ মিলত। তবে, সেই সময় পেরিয়ে এসেছে অনেক দিন। কেন্দ্রের সরকার পুরনো নোট বাতিল করে নতুন নোট এনেছে বাজারে। একটা রব উঠেছিল চার দিকে, এ বার জাল টাকার কারবারিরা আর সেই সুযোগ পাবে না। জাল টাকার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে ভেবে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু খুব বেশিদিন তা টেকেনি।
ফের নতুন করে জাল টাকা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। উত্তরবঙ্গের মালদহ থেকে কোচবিহারে এর মধ্যেই একাধিক জাল টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিশেষত পাঁচশো টাকার নোট জাল করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বাজারে। দিন কয়েক আগেই কোচবিহারের পানিশালা গ্রামের এক বাসিন্দার কাছ থেকে বেশ কিছু পাঁচশো টাকার জাল নোট উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতি চলছে। একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কিছু দিন আগেই পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও কেরল থেকে বাংলাদেশের ‘আনসারুল্লাহ’ গোষ্ঠীর কয়েক জনকে জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্বাভাবিক ভাবেই এমন সন্দেহ মনে আসা অমূলক নয়, জাল টাকা ছড়িয়ে দেওয়ার পিছনেও থাকতে পারে জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যদের হাত। জাল টাকা ছড়িয়ে আর্থিক ভাবে একটি অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করা জঙ্গিদের উদ্দেশ্য হতে পারে।
মালদহ, কোচবিহারের মতো জেলা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী। দুই এলাকাতেই বাংলাদেশের সঙ্গে কারবার চলে। কিছু চলে সোজাপথে। আবার চোরাপথেও চলে কারবার। তাই জাল টাকা ছড়িয়ে দেওয়া অসম্ভব নয়। কোচবিহারের মতো জেলায় আবার প্রচুর গাঁজার চাষ হয়। গাঁজা জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করা হয়। পুলিশ প্রায় প্ৰতিদিনই গাঁজা উদ্ধার করে। গ্রেফতারও করেছে অনেককে। কিন্তু গাঁজা চাষ বন্ধ হয়নি।। এর পিছনেও একটি চক্র রয়েছে, তা অস্বীকার করে না কেউই। মনে করা হচ্ছে, এই চক্র গাঁজার কেনাবেচায় জাল টাকা ব্যবহার করছে। সেটাও একটা বড় চিন্তার বিষয়। ঘটনা যেটাই হোক, সতর্ক থাকা প্রয়োজন প্রত্যেককেই। পুলিশ নিজেদের মতো কাজ করছে, সফলতাও পাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও সক্রিয় হওয়ায় যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমন সতর্ক থাকতে হবে সাধারণ মানুষকেও। অন্ততপক্ষে পাঁচশো টাকার লেনদেনের ক্ষেত্রে তা ভাল ভাবে পরখ করে দেখে নেওয়া প্রয়োজন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)