Advertisement
E-Paper

তিন জন খুনে তিন দিনেও কিনারা হয়নি

ইংরেজবাজার শহরের বিবেকানন্দ পল্লিতে একই বাড়িতে তিন জনের খুনের ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেলেও কোনও কিনারা না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে। পুলিশ তিন জনকে আটক করে জেরা করে চললেও, খুনের প্রকৃত কারণ কী বা ওই ঘটনায় কারা যুক্ত, সে বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশাই রয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০১:২৯

ইংরেজবাজার শহরের বিবেকানন্দ পল্লিতে একই বাড়িতে তিন জনের খুনের ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেলেও কোনও কিনারা না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে। পুলিশ তিন জনকে আটক করে জেরা করে চললেও, খুনের প্রকৃত কারণ কী বা ওই ঘটনায় কারা যুক্ত, সে বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশাই রয়ে গিয়েছে। ফলে এই ঘটনার তদন্তের কাজে পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কেন সেই প্রশ্ন উঠছে?

গত এক বছরের ইতিহাস থেকে দেখা যাচ্ছে, জেলায় প্রায় একশো ছোটো-বড় অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, যেগুলির কোনও কিনারা এখনও হয়নি বা কিছু অপরাধী ধরা পড়লেও মূল অপরাধীরা এখনও অধরাই রয়ে গিয়েছে। এ বছরেরই শুরুতে কালিয়াচক থানায় ঢুকে একদল দুষ্কৃতী ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ প্রতিরোধ করার বদলে কার্যত পালিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। মূল অভিযুক্তরা এখনও অধরা। রামরতনবাবুর বাড়ির কাছেই সুকান্ত মোড়ে গত এক বছর আগেই একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে ৯৯ লক্ষ টাকারও বেশি লুটের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ অবশ্য ব্যাঙ্কেরই এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল। এ ছাড়া গত এক বছরে শোভানগরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে লুট, চাঁচল ও জেলা সদরের রথবাড়িতে সোনার দোকানে চুরি, কালিয়াচকে কয়েকটি দোকানে পরপর চুরি, চলতি মাসেই এক রাতে তিনটি গুলিকাণ্ডে একজনের মৃত্যু সহ দুজন জখমের ঘটনা সহ আরও অনেক ঘটনা ঘটে গেলেও বেশিরভাগেরই কোনও কিনারা হয়নি।

মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘গত এক বছরে জেলায় ব্যবসায়ীদের উপরেই একশোর বেশি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পুলিশি ব্যর্থতায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধীরা ধরা পড়ছে না।’’ রামরতনবাবুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে এ দিন দেখা করতে গিয়েছিলেন সংসদ সদস্য মৌসম নূর। তিনিও বলেন, ‘‘জেলায় অপরাধের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হচ্ছে। এই খুনের ঘটনায় সিআইডি তদন্ত চললেও তারা যদি কিনারা করতে না পারে, তবে আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি করব।’’ এ দিন সেখানে সংসদের কাছে দিলীপকুমার অগ্রবাল, পবন দোকানিয়া, বিনোদ গোয়েঙ্কা সহ বেশ কিছু ব্যবসায়ী এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘জেলার কিছু এলাকা দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। একের পর এক অপরাধ ঘটছে। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রীয়তায় মূল অপরাধীরা ধরা পড়ছে না।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ আইন মেনেই কাজ করছে।’’ পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘সমস্ত অপরাধের ঘটনাতেই পুলিশ তদন্ত করে পদক্ষেপ করছে।’’

রামরতনবাবুদের খুনে তদন্ত কতদূর এগোলো?

পুলিশ জেনেছে, রামরতনবাবুর বাড়ি থেকে মাঝে মাঝেই টাকা চুরি হয়ে যেত। এই নিয়ে বাড়িতে সিসিটিভি বসানো হবে বলে জানিয়েছিলেন রামরতনবাবু। এই বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে সিআইডি কর্তারা। সেই সঙ্গে রঘু ও সাবির আলিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হচ্ছে। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রঘু সকাল আটটা নাগাদ প্রথম ঘটনাটি দেখে পরিবারকে জানায় বলে দাবি করেছেন। অপর দিকে সাবির জানিয়েছেন, তিনি সাড়ে সাতটা নাগাদ জানতে পেরেছেন।

রামরতনবাবুর মাত্র দুটি ঘরেই লুঠপাট হয়েছে। তাঁর অফিস ঘরের লকার ভাঙা হয়েছে। সম্প্রতি প্রোমোটারি ব্যবসার সুবাদে রামরতনবাবুর হাতে নগদ টাকা এসেছিল বলেও পুলিশ একটি সূত্রে জানতে পেরেছে। সেই টাকা অফিস ঘরে রাখা ছিল বলে জেনেছে পুলিশ। সেই টাকা আততায়ীরা নিয়ে গিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

পুলিশের অনুমান, লুঠের পাশাপাশি প্রবল আক্রোশ থেকেও খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy