Advertisement
E-Paper

রেলকর্মী সেজে স্টেশনে খাবার বিক্রির অভিযোগ এনজেপিতে

পোশাক দেখে মনে হয় যেন রেলকর্মী। গায়ে লাল-সাদা চেক জামা, মাথায় টুপি। নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) প্ল্যাটফর্মে ট্রলি নিয়ে খাবার বিক্রি করছেন প্রতিদিন। অভিযোগ, কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই এনজেপি স্টেশনে ট্রলি নিয়ে প্যাকেটে খাবার বিক্রি হচ্ছে। যাত্রীদের প্রভাবিত করতেই আইআরসিটিসি কর্মীদের মতো পোশাক পরে খাবার বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ০২:৫২
এ ভাবেই বিক্রি করা হয় খাবার। নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই বিক্রি করা হয় খাবার। নিজস্ব চিত্র।

পোশাক দেখে মনে হয় যেন রেলকর্মী। গায়ে লাল-সাদা চেক জামা, মাথায় টুপি। নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) প্ল্যাটফর্মে ট্রলি নিয়ে খাবার বিক্রি করছেন প্রতিদিন। অভিযোগ, কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই এনজেপি স্টেশনে ট্রলি নিয়ে প্যাকেটে খাবার বিক্রি হচ্ছে। যাত্রীদের প্রভাবিত করতেই আইআরসিটিসি কর্মীদের মতো পোশাক পরে খাবার বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। রেলের তরফেও এই অভিযোগগুলি স্বীকারও করে নেওয়া হয়েছে। তবে, অনুমোদনহীন এই খাবার বিক্রি রুখতে পদক্ষেপ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ এবং জিআরপির পরস্পরের উপর দায় চাপিয়েছে। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, অনুমোদনহীন খাবার বিক্রি হতে থাকলে যে কোনও দিন বড়সড় কোনও অঘটনের আশঙ্কা রয়েছে।
যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই প্ল্যাটফর্মে খোলা খাবার বিক্রি বন্ধ। আইআরসিটিসি অনুমোদিত যে স্টলগুলি স্টেশনে থাকে, সেখানেই খাবার তৈরির ব্যবস্থা থাকে। কী ভাবে খাবার রান্না হচ্ছে, তাতে নজরদারি চালানোর জন্যই জন্যই এই ব্যবস্থা থাকে। তবে এনজেপি-র প্ল্যাটফর্মে যে খাবার প্যাকেট করে বিক্রি হচ্ছে, তা কোথায় রান্না করা, কতটা পরিচ্ছন্নতা রয়েছে তা জানার কোনও উপায় নেই বলে অভিযোগ।
কী ভাবে চলছে খাবার বিক্রি ?
মঙ্গলবার দুপুর দু’টো। তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের তিন প্রান্তে দেখা গেল ট্রলি নিয়ে খাবার বিক্রি চলছে। যাঁরা খাবার বিক্রি করছেন তাঁদের কারও পড়নে সাধারণ পোশাক কারও আবার পড়নে আইআরসিটিসি কর্মীদের জন্য বরাদ্দ লাল-সাদা চেক জামা এবং কালো প্যান্ট। স্টেশনে দুরপাল্লার ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস থামল। যাঁরা লাল-সাদা জামা পড়েছিলেন, তাঁরা ট্রেনে খাবারের প্যাকেট হাতে উঠে বিক্রি শুরু করলেন। শুধু তিন নম্বর নয় চার, পাঁচ নম্বরেও একই দৃশ্য দেখা গেল। গুয়াহাটি ব্যাঙ্গালুরু এক্সপ্রেসের যাত্রী অনন্ত মিশ্র একটি খাবারের প্যাকেট কেনেন। তিনি বলেন, ‘‘এমনিতে স্টেশনের খোলা খাবার কিনি না। যাঁরা খাবার বিক্রি করছেন তাঁদের দেখে তো আইআরসিটিসির কর্মী মনে হল। তাই কিনলাম।’’

সাধারণত দুরপাল্লার সব ট্রেনেই প্যান্ট্রি কার থাকে। সেখান থেকেই যাত্রীদের খাবার সরবরাহ হয়। তবে ট্রেনের সাধারণ কামরার যাত্রীরা সবসময়ে সেই সুবিধে পান না। এনজেপির প্ল্যাটফর্মে আইআরসিটিসির কর্মীদের ঢঙে পোশাক পড়া কর্মীদের মূল লক্ষ্য দুরপাল্লার ট্রেনের সাধারণ কামরার যাত্রীরা।

উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথী শীল বলেন, ‘‘বাইরের কেউ প্ল্যাটফর্মে এসে অবৈধ ভাবে খাবার বিক্রি করছে। এদের অনেকে আবার আইআরসিটিসির কর্মীদের যে পোশাক রয়েছে, সে রকম পোশাক বাজার থেকে বানিয়ে নিয়েছেন।’’

এনজেপির ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আইআরসিটিসির তরফে জন আহার এবং ফুড প্লাজা রয়েছে। এ ছাড়া কোনও সংস্থার খাবার বিক্রির অনুমতি নেই বলে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও, প্ল্যাটফর্মের এই খাবার বিক্রেতারা খাবারগুলি রেলের ক্যান্টিনের তৈরি বলেও দাবি করছেন। এ দিন এক বিক্রেতা নিজের নাম রাজু বলে দাবি করলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এগুলো রেলের ক্যান্টিনে তৈরি। আমাদের সব অনুমতি আছে।’’ বিকাশ মুন্না নাম জানিয়ে আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘‘খুব পরিচ্ছন্ন ভাবে খাবার তৈরি হয়। রেল তো সব জানে।’’

অনুমতি ছাড়া খাবার বিক্রি ঠেকাবে কে, তা নিয়েও টানাপড়েন চলছে। রেলের এরিয়া ম্যানেজার পার্থবাবুর কথায়, ‘‘এ সব আমরা একাধিকবার রেল পুলিশকে জানিয়েছি। আবার অভিযান চালাতে বলব।’’ অন্যদিকে রেল পুলিশের এনজেপির ইন্সপেক্টর কোকিল রায় বলেন, ‘‘রেল যদি নির্দিষ্ট ভাবে না জানায় তবে আমাদের পক্ষে অভিযান চালানো সম্ভব নয়। কে ভুয়ো, সে তো রেল-ই জানিয়ে দেবে।’’

NJP station siliguri anirban roy train rail
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy