Advertisement
E-Paper

ঝড়ের দাপটে মৃত্যু, ঠাঁইহারা

কালবৈশাখীতে ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি ব্লকের একাংশ। সোমবার রাতের ঘটনা। একই দিনে ঝ়ড়, শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া, করণদিঘি বাজার গাঁও (১)-সহ লাগোয়া এলাকারও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০১:৪২
গৃহহীন: ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে ঘর, উড়ে গিয়েছে চাল। এমনই অসহায় হিলির বহু পরিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত।

গৃহহীন: ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে ঘর, উড়ে গিয়েছে চাল। এমনই অসহায় হিলির বহু পরিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত।

কালবৈশাখীতে ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি ব্লকের একাংশ। সোমবার রাতের ঘটনা। একই দিনে ঝ়ড়, শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া, করণদিঘি বাজার গাঁও (১)-সহ লাগোয়া এলাকারও।

সোমবার সন্ধেয় চাকুলিয়া থানার নিজামপুর এলাকায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয় এক শিশুর। মৃত মহম্মদ সাদনের (৭) বাড়ি বাগডোপ এলাকায়। চাকুলিয়ার নিজামপুর ১-র প্রধান আনওয়ারা গবি বলেন, ‘‘বাড়ি যাওয়ার সময় গাছ পড়ে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।’’ প্রশাসনের আধিকারিকদের বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

হিলিতে ঝড়ের তীব্রতায় ঘর হারিয়েছে বহু পরিবার। বিস্তীর্ণ এলাকার ঘরবাড়ির টিন, খড়ের চাল উড়ে গিয়ে বহু পরিবার খোলা আকাশের নীচে চলে এসেছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে রাত থেকে নিষ্প্রদীপ গোটা অঞ্চল। বিনশিরা, তিওড়, ত্রিমোহিনী, লালপুর, শারণবাড়ি, জগদীশপুর সহ ১২টি গ্রাম ও জামালপুর অঞ্চলে শতাধিক টিন এবং খড়ের চালের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। সদর রাস্তার উপর বড় গাছ পড়ে যান চলাচলও ব্যাহত হয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ব্লক প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেও অভিযোগ। হিলির বিডিও সঞ্জয় সুব্বা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতগুলোকে ক্ষতিগ্রস্তদের পলিথিনশীট বিলি করতে বলা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’ জেলাশাসক সঞ্জয় বসু ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের যাতে দ্রুত সাহায্য করা হয় সে জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিও ও বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী।

বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা হিলি ছাড়াও সোমবার সন্ধেয় বালুরঘাটের বাউল বোল্লা এলাকা দিয়েও ঝড় বয়ে যায়। বাউলের কাছে জাতীয় সড়কে গাছ পড়ে রাতের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

এ দিন দুপুরে ভিজে যাওয়া গৃহস্থালি জিনিসপত্রের পাশে মাথায় হাত দিয়ে বসেছিলেন হিলির ছোট কৃষক দিলীপ সরেন। তিনি বলেন, ‘‘ঝড়ে ঘরের চাল উড়ে যাওয়ায় পরিবারের সকলকে নিয়ে পাশের এক পাকাবাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পেয়েছি। কিন্তু ঘরের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর মেয়ে দিপালী নবম শ্রেণির পড়ুয়া। বৃষ্টির জলে তার সমস্ত বইপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। একই অবস্থা তিওড় এলাকার ছোটচাষি কালাম মণ্ডল বা জগদীশপুরের সর্বেশ্বর মণ্ডলেরও।

সোমবার ব্যাপক ঝড় ও শিলাবৃষ্টি দেবিগঞ্জ, লোধন, পোখরিয়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। শিলের ঘায়ে আহত হয়েছিলেন দু’শোরও বেশি বাসিন্দা। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘ গবাদি পশু মারা গিয়েছে। ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে।’’ সমস্ত রিপোর্ট না পাওয়া ক্ষতির হিসেব বলা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার গোয়ালপোখরের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা দেখেন বিধায়ক তথা গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি।

Dinajpur thunderstorm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy