Advertisement
E-Paper

মমতার পুলিশে আস্থা নেই! তৃণমূলের তালাবন্ধ দফতর খুলতে গেলেন মন্ত্রী উদয়ন নিজেই, জবাবে পড়ল বোমা

উদয়ন গুহের দাবি, অনেক বার বলার পরও কাজ হয়নি। পুলিশের উপর ভরসা হারিয়ে তাই নিজেরাই দলীয় কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু দলীয় কার্যালয় খুলতে গেলে বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৫২
(বাঁ দিক থেকে) উদয়ন গুহ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

(বাঁ দিক থেকে) উদয়ন গুহ এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা তৃণমূল কার্যালয় খুলতে নেতা এবং কর্মীদের নিয়ে কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। আর তা নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। পড়ল বোমা। অশান্তির অভিযোগে একে অপরকে দুষল তৃণমূল এবং বিজেপি। হল মিছিলের পাল্টা মিছিল।

উদয়নের দাবি, অনেক বার বলার পরও কাজ হয়নি। পুলিশের উপর ভরসা হারিয়ে তাই নিজেরাই দলীয় কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু দলীয় কার্যালয় খুলতে গেলে বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। অন্য দিকে, স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, বহিরাগতদের নিয়ে এসে এলাকা উত্তপ্ত করছেন মন্ত্রী নিজেই। সব মিলিয়ে উত্তেজনা চরমে। ঘটনাস্থলে পুলিশ। বস্তুত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই উত্তপ্ত দিনহাটার ভেটাগুড়ি এলাকা। তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘর্ষ হয়েছে দফায় দফায়। ভেটাগুড়ির সব্জি বাজার এবং রেলগেটের পাশে অবস্থিত তৃণমূলের দুটি কার্যালয়ই বন্ধ ছিল। শনিবার মন্ত্রী উদয়ন, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক-সহ জেলা নেতৃত্ব ওই দুটি কার্যালয়ে খোলার জন্য সকালে পৌঁছ যান ভেটাগুড়িতে। দলীয় কার্যালয় খোলাও হয়। পাশেই পথসভা করছিল তৃণমূল। অভিযোগ, সেই সময় আচমকা তৃণমূলের কার্যালয় এবং পথসভায় পর পর দুটি বোমা মারা হয়। আঙুল ওঠে বিজেপির দিকে।

উদয়নের কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে বিজেপির লাগামহীন সন্ত্রাসের কারণে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সহ এলাকার মানুষ নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তৃণমূলের দুটি দলীয় কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। ব্লক সভাপতিকে তির মারা হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে যে সহযোগিতা পাওয়ার কথা তা পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশকে বহু বার অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি। তাই আমাদের আসতে হয়েছে।’’ মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘সাধারণ মানুষ বা তৃণমূল কর্মীদের আমরা নিরাপত্তা দিতে না পারলে বুঝতে হবে আমদের নেতৃত্ব ব্যর্থ। তাই (আমাকে) আসতে হয়েছে।’’ পাশাপাশি, বোমাবাজির ঘটনায় একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়িতে জনা কয়েক দুষ্কৃতীরা আশ্রয় নিয়েছে। তারাই এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। উদয়নের কথায়, ‘‘বাইরে থেকেও অনেক দুষ্কৃতী এসে ওই বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে।’’

মন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘তৃণমূল আজ তাদের দলীয় কার্যালয় খুলতে গিয়েছে। সেটি তাদের দলীয় কর্মসূচি। বিজেপি কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই কর্মসূচির ধারেকাছেও যেন কেউ না যায়। বিজেপি কর্মীরা সেখানে যানওনি। কিন্তু তৃণমূলের পায়ের তলার জমি সরে গিয়েছে। গোটা জেলা থেকে ৫০০ লোকও নিয়ে আসতে পারেনি তারা। তাই নিজেদের দলীয় কার্যালয়ে নিজেরাই বোমা ফাটিয়ে বিজেপি কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার একটা ষড়যন্ত্র চলছে। এ সব করে আর লাভ নেই।’’

এখানেই শেষ নয়। মন্ত্রী উদয়ন বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে শান্ত ভেটাগুড়িকে অশান্ত করছেন। এই অভিযোগে মিছিল বার করেন ভেটাগুড়ির বিজেপি মহিলা সমর্থকেরা। মিছিল থেকে মন্ত্রীকে ঝাঁটাপেটা করার স্লোগান ওঠে। মিছিল প্রসঙ্গে বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক অজয় রায় বলেন, ‘‘উদয়ন গুহ বাইরে থেকে সমাজবিরোধীদের নিয়ে এসে শান্ত ভেটাগুড়িকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন। তারই প্রতিবাদে ভেটাগুড়ির মহিলারা একজোট হয়ে আজ ঝাঁটা হাতে নিয়ে মিছিল করছেন।’’ অন্য দিকে, বিজেপির অভিযোগের পাল্টা উদয়ন বলেন, ‘‘আমাদের নিজস্ব পার্টি অফিসে আমার নেতৃত্বে আমাদের কর্মীরাই বোমা মেরেছে, এই অভিযোগ হাস্যকর।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি যে জায়গায় মিটিং-মিছিল করেছে, ঝাঁটা দিয়ে সেটা পরিষ্কার না করে তারা নিজেদের আগে পরিষ্কার করুক। সেটাই ভাল হবে।’’

TMC BJP Cooch Behar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy