গৌরী মালি। নিজস্ব চিত্র
বিজেপিতে যোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পরপরই দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পরিষদের সদস্য গৌরী মালিকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির দাবি, গৌরীকে তৃণমূলে ফিরিয়ে আনতে তাঁর উপরে জোর করা হচ্ছে। ১৮ সদস্যের জেলা পরিষদে তৃণমূল এবং বিজেপির সদস্য এখন যথাক্রমে ৮ ও ১০। যদি গৌরী তৃণমূলে ফিরে যান তা হলে দুই দলের সদস্য সংখ্যাই ৯-৯ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে বিজেপির অনাস্থা আনার সম্ভাবনা কমে যাবে। তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, গৌরী কোথায় তারা জানে না। গৌরীকে অপহরণ যদি করাও হয়ে থাকে, তা হলে তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলে জেলা নেতারা দাবি করেছেন।
গৌরী সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে বিপ্লব মিত্রের হাত ধরেই দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন। স্থানীয় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌরী বাড়ি ফিরতেই তাঁকে তৃণমূলে ফেরাতে সক্রিয় হয় শাসকদল। সোমবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার বালুপাড়ার ফতেপুর এলাকার বাড়ি থেকে গৌরীকে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা বোঝানোর জন্য কোথাও নিয়ে যান বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার অভিযোগ করেন, ‘‘গৌরীকে অপহরণ করা হয়েছে।’’ তৃণমূল সেই বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে দলবদলের পর শনিবার জেলা পরিষদের ১০ জন বিজেপি সদস্যকে নিয়ে বিপ্লববাবু জেলায় ফেরেন। তার পরে অন্যদের সঙ্গে গৌরীও গত দু’দিন গোপন ডেরায় ছিলেন বলে দাবি। শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘এ দিন সকালে তৃণমূল কর্মীরা গৌরীর বাড়িতে হামলা করে হুমকি দেয়। তারপরই দুপুর ১২টা নাগাদ গৌরীদেবীকে বাড়ি থেকে জোর করে তুলে ছোট গাড়িতে চাপিয়ে বালুরঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।’’ থানায় অভিযোগ জানানো হচ্ছে বলে শুভেন্দু জানান।
তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি মনগড়া অভিযোগ করছে। আর কারও বাড়িতে হামলা হলে পুলিশকে জানালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’ হিলি থানার ওসি তাসি শিরিং লোপচা জানান, জেলাপরিষদ সদস্যকে অপহরণ করার কোনও ঘটনার কথা জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি।
তবে ঘটনায় বিপ্লব শিবিরে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। বিপ্লব বলেন, ‘‘আড়াই বছর না-হওয়ায় জেলাপরিষদে অনাস্থা আনতে পারবে না তৃণমূল। ফলে ওরা বিজেপিতে যোগ দেওয়া সদস্যদের দলে ফিরিয়ে আনতে বাঁকা পথ ধরেছে।’’
বিপ্লব বলেন, ‘‘সভাধিপতির নেতৃত্বে জেলাপরিষদের ১০ সদস্য আইন অনুযায়ী, হলফনামা দিয়ে এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ফলে তাঁদের কাউকে জোর করে কিংবা বুঝিয়ে ফের দলত্যাগ করে তৃণমূলে ফেরানোর চেষ্টা হলে নিয়ম অনুযায়ী তাঁর জেলাপরিষদের সদস্য পদই বাতিল হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy