Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তায় দাঁড়িয়ে মার, বিতর্কে ধর্তির স্ত্রী

শেষ পর্যন্ত ওই নাবালিকা ও তার মা এবং ধর্তিমোহনবাবুর স্ত্রীকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ৷

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

তৃণমূল নেতা ধর্তিমোহন রায়ের পরে এ বারে বিতর্কে তাঁর স্ত্রী রেবা রায়৷ রাস্তা দাঁড়িয়ে বাড়ির নাবালিকা পরিচারিকাকে মারধর করার অভিযোগে রীতিমতো জনতার রোষের মুখে পড়েন তিনি৷ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের একটি গাড়ি আটকেও চলে বিক্ষোভ৷

শেষ পর্যন্ত ওই নাবালিকা ও তার মা এবং ধর্তিমোহনবাবুর স্ত্রীকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ৷ যদিও ওই নাবালিকা বা তার বাড়ির লোকেদের তরফে কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের না করায় ধর্তিমোহনবাবুর স্ত্রীকে গ্রেফতারও করা হয়নি। পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘আমরা নাবালিকার পরিবারের লোকেদের অভিযোগ দায়ের করতে বলি৷ কিন্তু ওঁরা বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চান৷’’

মহালয়া ও পুজোয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের কাজ করার নির্দেশ দিয়ে কিছু দিন আগে বিতর্কে জড়ান ধর্তিমোহন৷ যার ফলে তাঁকে ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। যদিও এ বিষয়ে কোন নির্দেশ জেলায় এখনও আসেনি৷ এ দিন ধর্তির স্ত্রী রেবাকে থানায় নিয়ে গেলে সেখানে হাজির হন তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মী এবং তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের নেতারা৷

হলদিবাড়ির হুতুমডাঙা এলাকার বাসিন্দা ১৫ বছরের এক নাবালিকা মাস ছয়েক আগে ধর্তিমোহনের বাড়িতে কাজে যোগ দেয়৷ ৮ অক্টোবর ধর্তিমোহন সপরিবার পুরী বেড়াতে যান। তার এক দিন আগে ওই নাবালিকাকে তার বাড়িতে রেখে আসেন৷ এ দিন দুপুরে রেবাদেবী মেয়েটিকে নিজের নিয়ে আসেন। সঙ্গে ছিলেন মেয়েটির মা-ও।

কিন্তু বিকেল চারটা নাগাদ আচমকাই মেয়েটি ধর্তিমোহনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়৷ তার পরই টোটো নিয়ে তার পিছু ধাওয়া করেন রেবা৷ ৩ নম্বর ঘুমটির কাছে পান্ডাপাড়া লেনে তাকে ধরে ফেলেন তিনি৷ অভিযোগ, এর পরই ওই নাবালিকাকে মারতে শুরু করেন তিনি৷

স্থানীয় বাসিন্দা লক্ষ্মী রায় বলেন, ‘‘ওই মহিলা বাচ্চা মেয়েটিকে এমন ভাবে মারছিলেন, যা চোখে দেখা যায় না৷’’ ততক্ষণে আশপাশের মানুষও ছুটে আসেন৷ রেবাদেবীকে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা৷ তিনি যে ধর্তিবাবুর স্ত্রী, সে কথা জানার পরেও জনতা থামেননি৷ খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি আটকে দাবি করেন, ‘‘আমরা ওই মহিলার কড়া শাস্তি চাই৷’’

থানায় বসে নাবালিকার মা সুখবালা রায় বলেন, ‘‘এ দিন প্রথম থেকেই আমার মেয়ে বলছিল, ওই বাড়িতে সে আর থাকবে না৷ আমি ওই বাড়িতে বসে থাকার সময়ই ও একা একা বেরিয়ে যায়৷ তখন বৌদি ওর পিছনে যায়৷’’ নাবালিকার কথায়, ‘‘আমার এই বাড়িতে থাকতে ইচ্ছে করে না৷ এ দিন রাস্তায় মামি (রেবাদেবী) আমায় মেরেছে৷’’ রেবাদেবী বলেন, ‘‘ওকে মারার প্রশ্নই নেই৷ শুধু বলেছি, একা না বেরিয়ে মায়ের সঙ্গে যেতে৷’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অযথা কিছু লোক আমার সঙ্গে ঝামেলা করল৷’’ ধর্তিমোহনও বলেন, ‘‘ওকে আমাদের বাড়ির সবাই খুব ভালবাসে৷ মারার প্রশ্ন নেই৷’’ পুলিশের এক কর্তার কথায়, নাবালিকার মা-ও বলেন, ধর্তিবাবুর পরিবারের সঙ্গে তাঁদের অনেক দিনের সম্পর্ক৷ কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গিয়েছে৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC leader Maid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE