Advertisement
E-Paper

ধূপগুড়ি-কাণ্ডে তৃণমূল নেতার জামিন হাইকোর্টে

ধূপগুড়ি কাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সহ ৮ জন জামিনে ছাড়া পেলেন। গত ১২ জুন অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার শর্ত সাপেক্ষে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পায় ওই অভিযুক্তরা। ওই মামলার দু’জন অভিযুক্ত ফেব্রুয়ারিতে এবং আরও চার জন এপ্রিলে জামিনে মুক্ত হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৫ ০২:০৫

ধূপগুড়ি কাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সহ ৮ জন জামিনে ছাড়া পেলেন। গত ১২ জুন অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার শর্ত সাপেক্ষে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পায় ওই অভিযুক্তরা। ওই মামলার দু’জন অভিযুক্ত ফেব্রুয়ারিতে এবং আরও চার জন এপ্রিলে জামিনে মুক্ত হন।
গত বছর ১ সেপ্টেম্বর রাতে ধূপগুড়ি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যপাড়ায় ট্রাকটার ভাড়ার পাওনাগণ্ডা নিয়ে সালিশি সভা থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয় প্রতিবাদী মেয়ে বলে পরিচিত এক দশম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২ সেপ্টেম্বর ভোরে তাঁর দেহ রেল লাইনের ধার থেকে উদ্ধার হয়। ওই দিন ছাত্রীর বাবা ১৩ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী চন্দ্রকান্ত রায়, দলের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি গোবিন্দ ভৌমিক এবং কমিটির সম্পাদক তহিদুল ইসলাম। রেল পুলিশ তাঁদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করে।

চন্দ্রকান্ত রায়, তহিদুল ইসলাম সহ চার জনের জামিনের আবেদন গত ২৫ এপ্রিল হাইকোর্ট মঞ্জুর করে। এর আগে জামিনে মুক্ত হন অভিযুক্ত তহিদুল রহমান এবং হামিদার আলি। মঙ্গলবার যে অভিযুক্তরা জামিনে ছাড়া পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তৃণমূলের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি গোবিন্দ ভৌমিক ছাড়াও আছেন প্রদ্যোৎ দাস, বিজয় বসাক, বিকাশ বসাক, বিশ্বনাথ রায়, জহিরুদ্দিন মহম্মদ, সুরেন বর্মণ এবং বিনোদ মণ্ডল।

অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত বলেন, “হাইকোর্ট জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে।”

এদিন দুপুর নাগাদ মধ্যপাড়ার বাড়িতে বসে অভিযুক্তদের জামিনের খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃত ছাত্রীর দিনমজুর বাবা। তিনি বলেন, “বুঝতে পারছি অনেক পথ হাঁটতে হবে। উচ্চ আদালতে যাব। আমি শেষ দেখে ছাড়ব।” ছাত্রীর পক্ষে হাইকোর্টের আইনজীবী ভারতী মুৎসুদ্দি বলেন, “সমস্ত বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর বাবা গত ২ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের করার পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অভিযুক্ত ১৩ জন ছাড়াও ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক নাবালক সহ আরও দুজনকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। নাবালক জামিনে ছাড়া পায়। বাকি ১৪ জন জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি থাকে।

ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, মামলার শুরুতে জেলা পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩১৪, ৩২৩, ৫০৬, ৩৭৬, ৩০২, ২০১ ধারায় আটকে রাখা, মারধর, হুমকি, ধর্ষণ, খুন এবং দেহ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করলেও পরে মামলাটি রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রেল পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগ তুলে দিয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা, খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি, বল প্রয়োগ, দলবদ্ধ ভাবে হামলা, আঘাত করার অভিযোগে ৩৪১, ৩৪২, ৩২৩, ৫০৬, ৩৮৪, ৩৮৫, ৩৪, ৩০৫, ১২ (বি), ৩৫৪ ধারায় মামলা শুরু করে। এর পরে তদন্তের গতিবিধি দেখে ক্ষুব্ধ মৃত ছাত্রীর পরিবার গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। এদিকে তদন্ত শেষ করে গত বছর ২৬ অক্টোবর জলপাইগুড়ি জেলা দায়রা আদালতে রেল পুলিশ চার্জশিট পেশ করে।

এই ঘটনায় জেলা বামফ্রন্ট আহ্বায়ক সলিল আচার্যের প্রতিক্রিয়া, “কেন এমনটা হল বুঝতে পারছি না। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব।” এদিন সকাল থেকে জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির ছিলেন ধূপগুড়ির তৃণমূল নেতা গুড্ডু সিংহ সহ পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় সমর্থকরা। অভিযুক্তদের পরিবারের লোকজন মুখ খুলতে অস্বীকার করেন। তবে গুড্ডু সিংহ বলেন, “শুরু থেকে আমরা বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল ছিলাম। বলেছিলাম সিপিএম অক্সিজেনের আশায় ঘটনাকে অন্যভাবে সাজিয়ে আমাদের লোকজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। সেটাই ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে।”

trinamool tmc high court dhupguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy