দলের হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রী বা বিধায়কের কোনও আত্মীয়কে জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি পদে বসানোর পক্ষপাতী নয় তৃণমূল। গত ২৮ অক্টোবর কলকাতায় দলীয় বৈঠকে সে কথা ঘোষণা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি পদে কাদের বসানো হবে, তা নিয়ে জেলায় দলীয় নেতা ও কর্মীদের মধ্যে নানা জল্পনা ছড়িয়েছে।
ওই দুই পদে শেষ পর্যন্ত কারা বসবেন, তা নিয়েও জেলা পরিষদের সদস্যদের মধ্যেও উত্কণ্ঠা বাড়ছে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত গত সাড়ে চার মাসে দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী ও বিধায়কের আত্মীয়রা সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি হওয়ার দাবিতে দলের রাজ্য নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছেন।
তাই সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি নির্বাচনের আগে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে ওই দুই পদে কাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা গোপন রেখেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আজ, বুধবার বেলা ১১টা থেকে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলা পরিষদের সভাকক্ষে সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা।
গোয়ালপোখরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের পর্যটন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানির দাবি, বুধবার সকালে দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে একজন প্রতিনিধি রায়গঞ্জে এসে দলের জেলা সভাপতি অমল আচার্যের হাতে একটি মুখবন্ধ খাম তুলে দেবেন। ওই খামেই সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতির নাম থাকবে।
এ বছর জেলা পরিষদের ২৬টি আসনের মধ্যে ২৫টি আসন দখল করেছে তৃণমূল। তাঁদের মধ্যে জেলা তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রী ও বিধায়কদের একাধিক আত্মীয় জয়ী হয়েছেন। ইটাহার থেকে জয়ী হয়েছেন অমলবাবুর মেয়ে পূজা আচার্য। হেমতাবাদ থেকে জয়ী হয়েছেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম পালের স্ত্রী পম্পা পাল ও হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রফুল্ল বর্মনের স্ত্রী কবিতা বর্মন। করণদিঘি থেকে জয়ী হয়েছেন করণদিঘির তৃণমূল বিধায়ক মনোদেব সিংহের স্ত্রী বিপাশা দাস সিংহ ও করণদিঘি ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি আজাদ আলির স্ত্রী শেহেরবানু বিবি।
গোয়ালপোখর থেকে জয়ী হয়েছেন মন্ত্রী গোলাম রব্বানির ভাই গোলাম রসুল, চাকুলিয়া থেকে জিতেছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জাহিদ আলম আরজুর স্ত্রী নিখাত পারভীন, ইসলামপুর থেকে জয়ী হয়েছেন জেলা পরিষদের বিদায়ী তৃণমূল সদস্য জাভেদ আকতারের স্ত্রী ফারহাদ বানু ও চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের মেয়ে আরজুনা বেগম। তাঁরা সকলেই সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি পদের দাবিদার।
জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার দাবি, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতির নাম চূড়ান্ত করেছেন। তাই যে কেউ ওই দুই পদে বসতে পারেন। দলনেত্রীর নির্দেশেই ওই দুই পদে কারা বসতে চলেছেন, তা দলের সর্বস্তরের নেতা, বিধায়ক ও মন্ত্রীদের জানানো হয়নি।