ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গের চা-বাগিচার মন পেতে তৃণমূলের ভরসা এ বার ‘হলদিয়া মডেল’। সৌজন্যে, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার এক দশক পরে, এই প্রথম তৃণমূলের চা-শ্রমিক সংগঠনের ডাকে কেন্দ্রীয় স্তরে সমাবেশ হতে চলেছে এবং সে সমাবেশের প্রধান বক্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এত দিন চা-বলয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনিই সভা করেছেন, তা হয়েছে তৃণমূল বা অন্য শাখা সংগঠনের নামে। আগামিকাল, ১০ সেপ্টেম্বর মালবাজারে চা-শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সম্মেলন করবে তৃণমূল চা-বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন। ছ’টি সাংগঠনিক জেলা থেকে বারোশো শ্রমিক-প্রতিনিধি সম্মেলনে আসবেন। তাঁদের মধ্যে লটারিতে বাছাই করা শ্রমিকেরা বক্তব্যও রাখবেন। পরদিন প্রকাশ্য সমাবেশে ভাষণ দেবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এত দিন উত্তরের চা-বাগানে তৃণমূলের অন্তত হাফ ডজন চা-শ্রমিক সংগঠন কাজ করেছে এবং পারস্পরিক প্রতিযোগিতা করেছে। সব সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনে কেন্দ্রীয় সমাবেশ এ বারই প্রথম।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চা-বাগানে তৃণমূলের যত সংগঠন ছিল, সব ক’টিকে এক ছাতার তলায় এনে হলদিয়া মডেলে সম্মেলন করব। গত মে মাসে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের নিয়ে এ ভাবেই সম্মেলন করেছি।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, চা-শ্রমিকেরা মুখ ফেরানোয় গত লোকসভা ভোটে শুধু জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার আসনেই নয়, কোচবিহার এবং পাহাড়েও দল বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। গত বিধানসভা ভোটেও চা-বলয়ের ভোট পায়নি তৃণমূল, হাতছাড়া হয়েছিল শ্রমিকপ্রধান এলাকার আসনগুলি। তৃণমূলের দাবি, চা-বাগানগুলিতে সংগঠন থাকলেও, মূল দলের সঙ্গে সে সংগঠনের সমন্বয় ছিল না। যাঁরা সারা বছর চা-বাগানে সংগঠন করতেন, ভোটের সময়ে তাঁদের অনেককেই ‘কোণঠাসা’ করে রাখা হত বলে দাবি। পাশাপাশি, যাঁরা চা-বাগানে ভোটের প্রচারে যেতেন, তাঁদের পক্ষে এক-দু’দিনে চা-শ্রমিকদের মনের কথা বুঝে ওঠা সম্ভবও নয়। এ সব কারণেই ভোটের সময়ে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে তৃণমূলের মূল সংগঠনের দূরত্ব তৈরি হয়ে যেত বলে দাবি। সে দূরত্ব ঘোচাতেই পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের নজর চা-বলয়ে।
মাসখানেক ধরে সমাবেশের প্রস্তুতির জন্য জলপাইগুড়ি জেলার সব চা-বাগান ঘুরেছেন জেলা তৃণমূল নেতারা। চা-শ্রমিকদের সঙ্গে মূল দলের সমন্বয় করে কমিটিও তৈরি হয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘বাগানের চা-শ্রমিক সংগঠনের ইউনিট নেতা এবং এলাকায় দলের বুথ সভাপতিদের নিয়ে একটি করে কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy