রাস্তা জুড়ে রয়েছে টোটোর সারি। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।
হেলদোল নেই প্রশাসন হোক কিংবা পুরসভার। যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ, শহরে লাগাম ছাড়া ভাবে বাড়ছে টোটোর সংখ্যা। ফলে দিনের অধিকাংশ সময়ই যানজট লেগে থাকছে শহরে। সামান্য কয়েক মিনিটের পথ হয়ে উঠছে ঘণ্টা খানেকের।
টোটো রুখতে গত মার্চ মাসে অভিযান চালানো হয়েছিল। নির্বাচনের জন্য সেই কাজ থমকে যায়। এর পরেই ফের রমরমিয়ে শহরের চলছে টোটো তৈরির কাজ। এই নিয়ে রাজনৈতিক দল গুলির মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা কাউন্সিলর নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘শহরে পার্কিং ব্যবস্থা না থাকার জন্য এমনিতেই যানজট লেগে থাকত। আর এখন টোটোর সংখ্যা যে ভাবে দিনের পর দিন বাড়ছে তাতে যানজট আরও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তবুও সেই বিষয়ে কোন নজরই দিচ্ছে না তৃণমূল পরিচালিত ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষ।’’ শহরের যানজট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেসের কাউন্সিলর নরেন্দ্র নাথ তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘টোটোর উপরে লাগাম টানা উচিৎ। তা না হলে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করায় যাবে না।’’ এই বিষয়ে জেলা পরিবহণ বোর্ডের সদস্য তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার বলেন, ‘‘জেলা জুড়েই টোটো গণনা শুরু হয়েছে। পুরসভার তরফ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা সমস্যা মেটাতে তৎপর রয়েছি। তবে তা দেখতে পাচ্ছে না বিরোধীরা।’’
ইংরেজবাজার শহরের অন্যান্য সমস্যাগুলির মধ্যে যানজট অন্যতম। দিনের অধিকাংশ সময়ই যানজটের জেরে নাজেহাল হতে হয় শহরবাসীকে। শহরের ফুটপাত দখল হয়ে গিয়েছে। রাস্তার উপরে গাড়ি পার্কিং। যার জন্য শহরের রাস্তাগুলি সরু গলিতে পরিণত হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজারে লিখিত ভাবে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রিকশা রয়েছে। তবে অলিখিত ভাবে সেই সংখ্যা হবে প্রায় পাঁচ হাজার। এমন পরিস্থিতিতে আবার শহরে লাগাম ছাড়া ভাবে বাড়ছে টোটোর সংখ্যা। এই সংখ্যা বেড়েছে মাস ছয়েক ধরে। এখন শহরের যানজট সমস্যার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে টোটো। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী শুধু মাত্র ইংরেজবাজার শহরেই টোটো রয়েছে প্রায় তিন হাজার। তবে এখন সেই সংখ্যাটি আর হাজার খানেক বেড়ে গিয়েছে বলে অনুমান পুর প্রশাসনের একাংশের। দিনের শুরু থেকে রাত পর্যন্ত যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। স্কুল শিক্ষক অরুণপ্রসাদ বলেন, ‘‘ইংরেজবাজার শহর এখন যানজট নগরী হয়ে উঠেছে। একের পর এক অটো। এখন পায়ে হেঁটে শহরে যাতায়াত করার দায় হয়ে উঠেছে।’’
ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়া, বিএস রোড, নেতাজি মোড়, ফুলবাড়ি মোড়, গৌড় রোড, মকদমপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় দৈনিক দেখা যায় যানজটের চেনা ছবি। ফুলবাড়ি মোড় থেকে নেতাজি মোড়ে আসতে সময় লাগবে প্রায় সাত মিনিট। তবে সকাল ন’টা থেকে দুপুর ১২টা ও বেলা ৩টে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ওই রুট দিয়ে যাতায়াত করতে সময় লাগে ২০ মিনিটেরও বেশি। আর নেতাজি মোড় থেকে মেডিক্যাল কলেজ যেতে সময় লাগে ২৫ মিনিট। অতিরিক্ত টোটোর জন্য যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশেরা। ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মী বলেন, ‘‘টোটোর চালকেরা ঠিক মতো গাড়ি চালাতেও পারে না। ফলে পথ দুর্ঘটনাও ঘটে। আর শহরে যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে হলে টোটো বৃদ্ধির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে।’’
মাস তিনেক আগে টোটো বৃদ্ধি রুখতে অভিযান চালিয়েছিল জেলা প্রশাসন। শহরের একাধিক গ্যারেজে তৈরি হচ্ছে টোটো। টোটো বানানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। তবে ভোট পর্ব শুরু হতেই বন্ধ হয়ে যায় প্রশাসনের অভিযান। যার সুবাদে ফের শহরের একাধিক গ্যারেজে চলছে টোটো তৈরির কাজ। ফলে শহরে দিনকে দিন বাড়ছে টোটোর সংখ্যা।
এই বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা শাসক দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘ফের আমরা অভিযান শুরু করব। এখন আমাদের টোটো গণনার কাজ চলছে। সমস্যা মেটানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy