Advertisement
E-Paper

হেমন্তের ভিড়েই শীতে লাভের আঁচ

বন্‌ধ-আন্দোলনের হুমকির জেরে বছরের শুরুতে কিছুটা ভাঁটা পড়লেও, পুজোর ছুটি পর্যটকদের ঢল ফিরিয়ে এনেছিল দার্জিলিঙে।

রেজা প্রধান

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৬ ০২:০৬
দার্জিলিং ম্যালে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: রবিন রাই।

দার্জিলিং ম্যালে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: রবিন রাই।

বন্‌ধ-আন্দোলনের হুমকির জেরে বছরের শুরুতে কিছুটা ভাঁটা পড়লেও, পুজোর ছুটি পর্যটকদের ঢল ফিরিয়ে এনেছিল দার্জিলিঙে। গত অক্টোবর মাসের ১০ থেকে ১৫ দিন ভিড়ে ঠাসা ছিল দার্জিলিং। হেমন্তের ছোঁয়ায় শীতও জাঁকিয়ে পড়ছে পাহাড়ে। গত বছর শীতেও পর্যটকদের ভিড় দেখেছিল ম্যাল। এ বারও তেমনই আশা করছেন পাহাড়ের ট্যুর অপারেটর-সহ ব্যবসায়ীরা। বিশেষত এ বারের অক্টোবর মাসের ভিড় সে আশা জাগিয়ে দিয়েছে শৈলশহরে।

পর্যটক ঠাসা না হলেও ভিড় এখনও রয়েছে ম্যালে। ঝকঝকে আকাশে স্পষ্ট কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে ভোর থেকেই ম্যালে আনাগোনা শুরু হয়ে যাচ্ছে পর্যটকদের। কুয়াশা ঢাকা পাকদণ্ডি পথে ছাতা মাথায় নিজস্বী তোলার দৃশ্যও রয়েছে। সন্ধের ম্যালেও বসছে পর্যটকদের জমাটি আড্ডা। দার্জিলিঙের এক হোটেল ম্যানেজার রাজেশ রজক বললেন, ‘‘পর্যটনের সেই পুরোনো ধারণা আর নেই। গরমের সময় ভিড় হবে আর বর্ষা-শীতে পর্যটকেরা পাহাড়ে আসবেন না, এমনটা আর দেখা যায় না। গতবার শীতেও বেশ ভাল ভিড় হয়েছিল, এ বারের অক্টোবরও মন্দ ছিল না।’’

রাজেশবাবু জানালেন, গত অক্টোবর মাসের শেষ দশদিন তাঁর হোটেলের সব ঘর বুকিং ছিল। হোটেলে ষাটটি ঘরের সবকটিতেই ছিল পর্যটক ঠাসা।

দার্জিলিঙে ভিড়ের কিছুটা আন্দাজ মেলে পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানায় গেলে। পর্যটন মরসুমে গড়পরতা ৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। এ বারের অক্টোবর মাসে গড়ে টিকিট বিক্রি হয়েছে সাড়ে তিন থেকে চার হাজারের কাছাকাছি। তুষারচিতা, রেড পান্ডার খাঁচার সামনে দেখা গিয়েছে লম্বা লাইন। ভিড় রয়েছে এখনও। চিড়িাখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করলেন গড়পরতা তিন হাজার টিকিট বিক্রি হচ্ছে। টয় ট্রেনের টিকিটেরও ভাল চাহিদা রয়েছে। সাত সকালেই দার্জিলিং স্টেশনের সামনে টিকিটের লাইনে দেখা মিলছে ভিন্‌ রাজ্যের পর্যটকদেরও। গুজরাত থেকে এসেছেন ১০ পর্যটকের একটি দল দল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সঞ্জীব কুমার। গত দু’দিন ধরে টিকিট জোগাড় করতে এসেও ফিরে গিয়েছেন। শুক্রবার বললেন, ‘‘ভিড় কম থাকবে বলেই এই সময়ে দার্জিলিঙে আসা। তবু টয় ট্রেনের টিকিট পেতে দু’দিন অপেক্ষা করতে হল।’’

পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে টয় ট্রেনের যাতায়াতও বাড়ানো হয়েছে। এতদিন দার্জিলিং থেকে ৬টি জয়রাইড হতো, এখন ৯টি রাইড চালানো হচ্ছে বলে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। আগামী নভেম্বর মাসেও প্রতিদিন ৯টি রাইডই চালানো হবে বলে দাবি করলেন রেলের এক কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘পর্যটকদের ভিড় না হলে এত বেশি রাইড চালানো যাবে না। তবে মনে হচ্ছে তেমন আশঙ্কা নেই। এখনই রোজ প্রতিটি রাইডে গড়ে ৪০০ জন করে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে।’’

তবে শুরুটা অবশ্য এমন ছিল না। গত সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের নানা কর্মসূচি নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেছিল মোর্চা। টানা বনধ ডাকার হুমকি দিয়েছিলেন জিটিএ চিফ বিমল গুরুঙ্গ। মাস দেড়েক আগে প্রতীকী বনধও ডাকেন তিনি। যদিও রাজ্য সরকারের কড়া পদক্ষেপে বন্‌ধে সরকারি অফিস, যান চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল পাহাড়ে। কিন্তু অশান্তির আশঙ্কায় পর্যটকদের বুকিং বাতিল হতে শুরু করে। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে পর্যটন মরসুনমে কোনও আন্দোলন হবে না বলে ঘোষণা করেন গুরুঙ্গ। তারপর থেকে ফের ভিড় বাড়তে থাকে। দার্জিলিঙের পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ লামা বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় অক্টোবরের শুরুটা কিছুটা ভাঁটা পড়ে। যদিও পরে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে। ভিনরাজ্যের প্রচুর পর্যটক এই সময়েও পাহাড়ে আসছেন। আশা করি শীতের বাকি সময়টা ভালই ভিড় হবে।’’

Darjeeling Tourism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy