Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ভরা মরসুমে জলসঙ্কট, লাভায় নাকাল পর্যটকেরা

পুজোর ছুটির মধ্যে জলসঙ্কটে নাকাল লাভায় আসা পর্যটকেরা। জল চেয়ে না পেয়ে হোটেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিবাদও বাধছে পর্যটকদের।

সব্যসাচী ঘোষ
লাভা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৪১
Share: Save:

পুজোর ছুটির মধ্যে জলসঙ্কটে নাকাল লাভায় আসা পর্যটকেরা। জল চেয়ে না পেয়ে হোটেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিবাদও বাধছে পর্যটকদের।

পুজোর ছুটির প্রথম দিন থেকেই পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছে কালিম্পঙের এই শৈলশহরে। প্রতিটি হোটেলই মাস দু’য়েক আগে থেকেই অগ্রিম দিয়ে বুক করে নিয়েছিলেন পর্যটকেরা। লাভা জুড়ে ভিড় বাড়তেই তীব্র হয়েছে জলসঙ্কট। পর্যটকেরা জানাচ্ছেন, হোটেলের শৌচাগারে কল খুললে জল গড়াচ্ছে না। জলের পরিমিত ব্যবহার করতে দিনের নির্দিষ্ট সময়েই শৌচাগার ব্যবহারের পরামর্শও দিচ্ছেন হোটেল মালিকরা। কিন্তু অল্প জল ব্যবহারে অনভ্যস্ত পর্যটকেরা বেশিরভাগই তা মেনে চলতে পারছেন না। তাই গড়ালেই কার্যত খটখটে হয়ে পড়ছে লাভা। বচসা বাধছে পর্যটক ও হোটেলের কর্মীদের।

পুজোর ছুটি কাটাতে কলকাতার ভবানীপুর এলাকা থেকে সপরিবারে লাভাতে এসেছেন রূপক সান্যাল। তিনি বলেন, “তিন মাস আগে পুরো বুকিং ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে করিয়েছিলাম। তখন লাভায় জলকষ্টের কথা কেউ আমাদের জানাননি। এখন ঘড়ি দেখে এক থেকে দেড় বালতি জল পাচ্ছি। বেড়াতে এসে এ যেন এক যন্ত্রণা!” একই দশা বেহালার বাসিন্দা সুজিত বসুদেরও। তিনি জানালেন, সারাদিন ঘোরাঘুরি করে বিকেলে হোটেলে ফিরে হাত-মুখ ধোওয়ার জলটুকু মিলছে না।

লাভার পাহাড়ে এই জলসঙ্কট অবশ্য নতুন নয়। হোটেল মালিকদের অনেকের ক্ষোভ, বছরের বছর হোটেল বেড়ে চললেও জলের যোগান বিন্দুমাত্রও বাড়েনি। তাই হোটেলগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বাড়লেই সমস্যা তীব্র হতে থাকে। লাভায় মোট ৫৫টি বেসরকারি হোটেল রয়েছে। সেগুলিতে ৪০০রও বেশি দ্বিশয্যাবিশিষ্ট ঘর রয়েছে। তাই এই বিপুল জলের যোগান দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। লাভা হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ধ্রুব রাই বলেন, “লাভাতে জলের অভাব বহুদিন থেকেই রয়েছে, তবে আমরা মানিয়ে গুছিয়ে চালিয়ে নিতে পারলেও পর্যটকেরা অনেকেই তাতে অভ্যস্ত নন বলে সমস্যা হয়।” আরেক হোটেল ব্যবসায়ী অরিন্দম দত্ত বলেন, “লাভাতে জলের সমস্যা যে রয়েছে তা আমরা কখনওই গোপন করি না। অনেকে মানিয়ে নিতে পারেন। তবে অনেকের সমস্যাও হয়।”

তবে আগামী বছর থেকেই জল সমস্যা মিটতে চলেছে বলেই স্থানীয়দের দাবি। লাভায় নতুন জলের পাইপ লাইন বসছে, সেই কাজও শুরু হয়েছে। তাই পর্যটকদের আর অভিযোগ থাকবে না বলেই আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীদের। আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসনও। কালিম্পঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক হরিশঙ্কর পানিতকর বলেন, ‘‘লাভা লাগোয়া নেওড়াখোলা এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জল প্রকল্পের কাজ করছে। আগামী বছরের গোড়াতেই সেই কাজ শেষ হওয়ার কথা। তা হয়ে গেলে জলসমস্যা মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Crisis Tourists
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE