Advertisement
E-Paper

পুজো-ভিড় দেখে আশা পর্যটনে

এ বার নতুনত্ব বলতে, বেশিরভাগ পর্যটকই নিজের সঙ্গে থাকা গাড়ি নিয়ে এসেছেন ঘুরতে।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৭
ভিড়: চলতি পুজোর মরসুমে টাইগার হিল। নিজস্ব চিত্র।

ভিড়: চলতি পুজোর মরসুমে টাইগার হিল। নিজস্ব চিত্র।

করোনার জেরে লকডাউনে বিপুল ধাক্কা লেগেছিল পর্যটন শিল্পে। তার জের এখনও রয়েছে। তবে আনলক পর্বে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে পর্যটন। এ বার পুজোর মরসুমে ডুয়ার্স থেকে পাহাড়ের একাধিক জায়গায় পর্যটকদের দেখা গিয়েছে। পাহাড়ের বহু এলাকা এখনও বন্ধ। যে ক’টা এলাকা খোলা রয়েছে সেখানেই দেখা গিয়েছে পর্যটনদের ভিড়। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে মাসের শেষ অবধি সব জায়গায় পর্যটকেরা থাকছেন। সরকারি থেকে বেসরকারি ক্ষেত্রে পুজোর পাঁচদিন কোথাও কোথাও ১০০ শতাংশ বুকিং ছিল। হোমস্টেগুলোও দীর্ঘদিন পর অনেকটাই সচল হয়েছে। যা দেখে মুখে একটু হলেও হাসি ফুটেছে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের।

পাহাড়ে-ডুয়ার্সে ঘুরতে আসা অনেক পর্যটকই ট্রেনে ও বিমানে আসেন। এ বার নতুনত্ব বলতে, বেশিরভাগ পর্যটকই নিজের সঙ্গে থাকা গাড়ি নিয়ে এসেছেন ঘুরতে। কলকাতা থেকে মালদহ, কোচবিহার থেকে রায়গঞ্জ বা পাহাড়ের লোকজনও ঘুরেছেন সমতলের ডুয়ার্সে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্যানিটাইজ়েশনে নজর থাকছে পর্যটকদের। সরকারি থেকে বেসরকারি রিসর্ট, হোটেল বা হোমস্টে মালিকেরা দীপাবলিতে আরও ভাল মরসুমের আশা করছেন। পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদী রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ আর ঘরে থাকতে চাইছে না। অনেক জায়গায় ঘরই নাই শুনছি। আর গ্রামীণ স্তরে হোমস্টেগুলো চালু হওয়ায় অনেকে উপকৃত হবেন।’’

মার্চ মাস করোনা সংক্রমণ শুরু হতেই গোটা দেশের সঙ্গে উত্তরের পর্যটন শিল্প পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পর্যটক তো দূরের কথা দার্জিলিং, কালিম্পং বা সিকিমের মত পাহাড়ি এলাকায় বাইরের লোকজন ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যায়। ধীরে ধীরে সব বন্ধের জেরে গরমের মরসুমে এই অঞ্চলে ক্ষতির পরিমাণ প্রতিদিন ১৯-২৫ কোটি টাকা হয়েছে। গত জুলাই থেকে পরিস্থিতি বদল হওয়া শুরু হলেও বাধা বিপত্তি চলছিলই। পাহাড়ের সমাজিকস্তরে করোনা আতঙ্ক, পর্যটকদের হোটেল থেকে নিচে নামিয়ে দেওয়া, হোটেল-রিসর্ট বুকিং না নেওয়ার ফতোয়ার ঘটনাও সামনে আসে। ব্যবসা বন্ধের জেরে হোটেল মালিক, কর্মী, পরিবহণ ব্যবসায়ী, চালক –সবাই বিপাকে পড়েন। অনেকের সংস্থা বন্ধ করার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়।

ধীরে ধীরে কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সাহায্যে বেসরকারি পর্যটন সংগঠন, বণিকসভার প্রচার, সচেতনতায় কাজ হয়। এতে পরিস্থিতি বদল হওয়া শুরু হয়। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরজিম ডেভলমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘ট্রেন এবং বিমানের দেরিতে চালু হওয়াটা প্রভাব ফেলেছে। নইলে আরও ভাল সাড়া মিলত। দীপাবলিতে ভাল মরসুম হবে মনে হচ্ছে।’’

পর্যটন সংগঠনগুলিই জানাচ্ছে, দার্জিলিঙের তুলনায় কালিম্পঙের পাহাড়ি এলাকায় পর্যটক বেশি এসেছে। আবার ডুয়ার্সের গরুমারা, মূর্তি থেকে লাটাগুড়িতে উপচে পড়া ভিড় ছিল পুজোর দিনগুলিতে। নভেম্বর মাসে কালীপুজোর পরে বুকিং কমছে। কিন্তু ডিসেম্বর মাসকে ঘিরে প্রতিদিন খোঁজখবর বাড়ছে। গরুমারা ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি মহেশ্বতা রায় বলেন, ‘‘পরিস্থিতি ভিডিও কলিং করে বন্ধু, পরিচিতদের দেখাচ্ছেন পর্যটকেরা। ছয়মাস পর সত্যিই আশার আলো দেখছি।’’

দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে সব মিলিয়ে ৩৫০ মত বড়, মাঝারি নথিভুক্ত হোটেল রয়েছে। আরও পাঁচশোর মত ছোট-মাঝারি হোটেল আছে। হোমস্ট রয়েছে দেড় হাজারের মত। কালিম্পঙে কোথাও কোথাও গত এক সপ্তাহে ৭০-১০০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। দুই শৈলশহরের হোটেল মালিকদের সংগঠনের সচিব সিদ্ধান্ত সুদ এবং বিনোদ খন্নার মতে, পরিস্থিতি বদলেছে এটাই বড় বিষয়।

North Bengal Tourists
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy