কোচবিহারের নাটাবাড়ি ঝিল থেকে আনা হয় পদ্ম। রায়ডাক নদীর পবিত্র জল সংগ্রহ করা হয় ভুটান পাহাড় থেকে। বলি দেওয়া হয় ৫০টি পাঁঠা। পুজোর চার দিন এলাকার লোক সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে পালাগান, কবিগান, মনসামঙ্গল, ভাওয়াইয়া গানের আসর বসানো হয়। আলিপুরদুয়ার জেলার ভাটিবাড়ি হরিবাড়ির পূজার গত ১২৩ বছর ধরে এটাই ট্র্যাডিশন। দায়িত্বের হাতবদল হয়েছে। কিন্তু সেই ঐতিহ্য থেকে একচুলও সরে আসেনি উদ্যোক্তারা।
১৮৯৩ সালে তৎকালীন জোতদার পলেশ্বর দাস, মুন্সিবাবু, ধনেশ্বর ভট্টাচার্য সহ এলাকার বিশিষ্ট জনেরা এই পূজার সূচনা করেন। সে সময় এলাকার এটিই ছিল একমাত্র দুর্গা পূজা। তেমন যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। গোরুর গাড়ি, মহিষের গাড়িতে চেপে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে এই পূজায় সামিল হতেন। এখনও পূজার চার দিন ভিড় সামলাতে উদ্যোক্তাদের হিমসিম খেতে হয়। হরিবাড়ি স্থায়ী কমিটির সম্পাদক বাদলচন্দ্র দাস, সভাপতি বঙ্কিমচন্দ্র দাস জানান, আয়োজনে চমক না থাকলেও প্রচণ্ড নিয়ম নিষ্ঠা ভরে পুজো হয় এখানে। অষ্টমীর দিন তিন থেকে চার হাজার মানুষ অঞ্জলি দেন। সূচনা লগ্ন থেকে এলাকার লোক সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। এ বছরও সেটা থেকে সরে আসছি না আমরা।
পূজা কমিটির সম্পাদক বীরেনচন্দ্র দাসের কথায়, ‘‘এই হাইটেক যুগেও আমরা আমাদের পুজার আয়োজনের ১২৩ বছরের ঐতিহ্য বজায় রাখছি। এলাকার মানুষরা স্বতস্ফূর্ত হয়ে চাঁদা দেন।’’ প্রতি বছর এলাকার বাসিন্দাদের মধে থেকে একজন প্রতিমার খরচ দেন। আগামী সাত বছরের প্রতিমার খরচ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই সাতটি আবেদন পত্র জমা পড়েছে। বীরেনবাবু জানান, লোকসংস্কৃতিকে তুলে ধরার পাশাপাশি এ বছর মিশন বাংলার উপর প্রচার রাখছি। পুজো প্যান্ডেলে পোস্টার ব্যানার লাগানোর পাশাপাশি হ্যান্ডবিল বিলি করা হবে।
স্থানীয় বধূ মিঠু সেনের কথায় এলাকায় অনেক বড় পূজা হলেও হরিবাড়ি পূজা আমাদের কাছে আলাদা। এখানে যা আনন্দ ও মজা পাই সেটা অন্য কোথাও মেলে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy