রাস্তা তৈরির জন্য কাটা হচ্ছে গাছ। ছবি: বিনোদ দাস
সম্প্রতি জোশীমঠে ধসে ফাটল দেখা দিয়েছিল। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে জোশীমঠ বসে যাওয়ার ছবি। অপরিকল্পিত ভাবে উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি প্রভৃতি সেখানকার পর্বতে ফাটলের কারণ বলে দাবি। দার্জিলিঙের পাহাড়েও ক্রমাগত অপরিকল্পিত ভাবে নানা নির্মাণকাজ চলছে বলে অভিযোগ। এই পাহাড়েও জোশীমঠের পরিস্থিতি হবে না তো? প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশপ্রেমী, ভৌগলিকেরা।
দার্জিলিং পাহাড়ের ঢালে সম্প্রতি সেবক থেকে যে রেল প্রকল্পের কাজ চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক। পাহাড়ের ভিতর দিয়ে লাইন পাতার কাজ চলছে। তিনধারিয়ায় বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বার শুরু হয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সেবক সেনাছাউনি পর্যন্ত চার লেনের রাস্তার কাজ। শিলিগুড়ি মহকুমার বালাসন সেতু থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তা তৈরিতে নির্বিচারে কয়েক হাজার গাছ কাটা হচ্ছে। তাতে পরিবেশের ভারসাম্যের উপর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে। তাদের দাবি, তারা বন দফতরের অনুমতি নিয়েই গাছ কাটছে এবং বেশির ভাগই ছোট গাছ। দাবি, গাছ যেমন কাটা হবে, তেমন কাজের শেষে গাছ লাগানোও হবে। প্রকল্পের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি শহর ইতিমধ্যে কংক্রিটের জঙ্গলের পরিণত হয়েছে। রাস্তার কাজে পরিবেশে প্রভাব পড়বে না।’’
প্রকল্পের আধিকারিকদের দাবি মানতে চাননি পরিবেশপ্রেমী সংস্থাগুলি। তাদের যুক্তি, গাছ কাটলে শুধু পরিবেশের বায়ুতে ভারসাম্যই নষ্ট হয় না, গাছ যে পদ্ধতিতে মাটিকে ধরে রাখে, তারও খতি হয়। ক্রমাগত বন্যা, মাটি ধসে যাওয়াও গাছ কাটার পরিণাম। গত বছরও দার্জিলিঙের রাস্তায় বড় ধস নেমেছিল।
পরিবে প্রেমী সংস্থা ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু জানান, গত ১০ বছরে শিলিগুড়ি এবং আশপাশে উন্নয়নের কাজে ৩০ হাজারের মতো গাছ কাটা পড়েছে। লাগানো হয়নি তার ২০ শতাংশও। তাঁর বক্তব্য, ৩০-৪০ বছরের পুরানো গাছ কাটা পড়লে বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের ঢাল সংকীর্ণ জায়গা। রাস্তা যে ভাবে চওড়া হচ্ছে, তাতে নতুন করে গাছ লাগানোর জায়গা থাকে না।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy