Advertisement
E-Paper

তৃণমূল নেতাকে খুন মালদহে, জখম দাদা

বকেয়া টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে এক যুবক সহ সাত জনের বিরুদ্ধে।ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে গেলে আক্রান্ত হন তাঁর এক আত্মীয়। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানার সাহাবানচক গ্রামে। এই ঘটনায় গ্রাম জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ফিরোজ মিঞা(৪০)। তিনি পেশায় চাষি ছিলেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর খুড়তুতো দাদা আফসার আলি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০২:২৩
নিহত ফিরোজ মিঞা।

নিহত ফিরোজ মিঞা।

বকেয়া টাকার জন্য চাপ দেওয়ায় এক তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে এক যুবক সহ সাত জনের বিরুদ্ধে।ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে গেলে আক্রান্ত হন তাঁর এক আত্মীয়। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানার সাহাবানচক গ্রামে। এই ঘটনায় গ্রাম জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ফিরোজ মিঞা(৪০)। তিনি পেশায় চাষি ছিলেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর খুড়তুতো দাদা আফসার আলি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফিরোজ মিঞার ভাই ফাকিরউদ্দিন ওই অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি। ফিরোজ মিঞাও গ্রামে বেশ পরিচিত মুখ। দাবি, ওই গ্রামের বাসিন্দা বাবলু শেখ সুদের ব্যবসা করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বছর আগে গ্রামেরই এক বাসিন্দা ঈশা মিঞা তাঁর কাছে সুদে এক লক্ষ টাকা ঋণ নেন। অভিযোগ ঈশা সেই টাকা বাবলুকে ফেরৎ দিচ্ছিল না। এই নিয়ে গত চার মাসে আগে গ্রামে সালিশি সভা বসানো হয়। সেই সালিশি সভায় নেতৃত্ব দেন ফিরোজা। ফিরোজ ঈশাকে টাকা ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং সুদ সমেত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে সালিশি সভায় রায় দেন। এরপরেও ঈশা বাবলুকে টাকা ফেরৎ দেননি বলে অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ ঈশাকে বাজারে দেখতে পান ফিরোজ। টাকা কেন ফেরৎ দিচ্ছে না জানতে চাইলে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। সেই সময় প্রতিবেশীদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটে যায়। পরে এদিন রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ ফিরোজ গ্রামেরই এক চায়ের দোকানে বসেছিলেন। সেই সময় ঈশার নেতৃত্বে সাত জনের একটি দল হাঁসুয়া নিয়ে হাজির হয় এবং তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে বলে অভিযোগ। ভাইকে কোপাতে দেখে বাঁচাতে ছুটে আসেন দাদা আফসার আলি। তাঁকেও হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয়।

ঘটনায় এলাকায় ব্যপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা ছুটে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। তাঁদেরে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পড়শিরা প্রথমে ভর্তি করেন দড়িয়াপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। দুই ভাই এর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় রাতেই ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা স্থানান্তরিত করেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ মৃত্যু হয় ফিরোজ মিঞার। আফসার আলির আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতা পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনায় ঈশা সহ সাত জনের নামে বৈষ্ণবনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মৃতের ভাই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ফাকিরউদ্দিন বলেন, ‘‘দাদাকে গ্রামের মানুষেরা ভালোবাসেন। মানুষের কিছু হলেই ছুটে যেতেন তিনি। গ্রামের এক যুবকের টাকা ঈশা মিঞা ফেরৎ দিচ্ছে না। এই নিয়ে গ্রামে তাঁরা একটি সালিশি সভা বসায়। সেখানে আমার দাদা গিয়েছিল। এদিন ঈশা দলবল নিয়ে আমার দাদাকে কুপিয়ে খুন করে।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘আমার আরেক দাদাকেও কোপায় তারা। তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ। ঈশা কংগ্রেস কর্মী হিসেবে পরিচিত। আমরা থানায় অভিযোগ করেছি।’’ তাঁরা পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছেন, যাতে দ্রুত ঈশাকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই সুদ ব্যবসায়ী বাবলু শেখ বলেন, ‘‘ঈশার কাছে আমি সুদ সমেত প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা পাব। আমাকে সে টাকা ফেরৎ দিচ্ছিল না। তাই গ্রামে সবাই মিলে আমরা সালিশি সভা বসিয়েছিলাম। আর গ্রামের সবাই ফিরোজবাবুকে ভালোবাসেন। তাই তাঁকে ডাকা হয়েছিল। তিনি ঈশাকে দ্রুত টাকা ফেরৎ এর নির্দেশ দেন। এদিন তাঁকে কুপিয়ে সে খুন করেছে।’’

ঘটনার পর থেকে গ্রাম ছাড়া অভিযুক্ত ঈশা সহ তার পরিবারের লোকেরা।

এই বিষয়ে মোথাবাড়ির কংগ্রেসের বিধায়ক তথা জেলার সাধারণ সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘এখানে দলের কোনও বিষয় নেই। টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিষয়ের জেরে খুন।’’ মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।পরিবারের লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, ‘‘সালিশি সভা বসানোর বিরুদ্ধে আমাদের দল। ওই নেতা সালিশি সভা কেন বসিয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সেই সঙ্গেই যারা ওঁকে খুন করেছে, তাদের ধরতেও বলা হয়েছে পুলিশকে।’’

Malda Trinamool BJP Congress municipal election firoj mia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy