স্নেহ: হাসির কোলে উদু ও বুচি। নিজস্ব চিত্র
এই দশমীর দিন কলেজপাড়ার ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল মালকিন বর্ণালী ঘোষের দেহ। পুলিশ এসে যখন দেহ নামাতে যায়, তখন দুই পোষ্যের ঝাঁপাঝাপিতে দেহের কাছে যেতেই পারছিল না তারা। পরে পশুপ্রেমী সংস্থার সদস্যদের ডেকে সরানো হয় ওই দুই পোষ্য উদু আর বুচিকে। একা থাকতেন বর্ণালীদেবী, তাঁর সঙ্গী বলতে ছিল এই দু’টি স্পিৎজ প্রজাতির কুকুর। তাঁর মৃত্যুর পরে পুলিশের অনুমতিতেই পোষ্য দু’টিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান বর্ণালীদেবীর এক পরিচারিকা মিনু চৌধুরী।
উদু আর বুচি কেমন থাকবে তা নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল শহরের পশুপ্রেমীরা। সোমবার মিনুদেবীর বাড়িতে গিয়ে দেখা মিলল সেই দুই পোষ্যের। নতুন পরিবার পেয়ে তারা এখন অনেকটাই ছটফটে। মিনুদেবী আর তাঁর স্বামী তপন চৌধুরী প্রায় ২৫ বছর ধরে কুকুর পুষছেন। তাঁদের বাড়িতে আগে থেকেই ভারতীয় ও শঙ্কর প্রজাতির দু’টি কুকুর রয়েছে। ফলে উদু-বুচিকে বুঝতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি বলে জানান তাঁরা। তপনবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ বলল আপাতত দু’মাস রাখুন। কিন্তু আমাদের ইচ্ছে ওদের রেখে দেব।’’
হোটেল কর্মী তপনবাবু আর মিনুদেবীর দুই মেয়ে হাসি আর খুশি। এ মধ্যে হাসির সঙ্গেই বেশি বন্ধুত্ব হয়েছে উদু আর বুচির। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হাসির স্কুলে এখন ছুটি চলছে। ফলে সকাল থেকেই সে সময় কাটায় বাড়ির নতুন দুই সদস্যের সঙ্গে। তার কথায়, ‘‘আমার কোলে উঠলে ওরা নামতেই চায় না। মায়ের সঙ্গেও ওদের বেশ বন্ধুত্ব।’’ উদু-বুচির জন্য দুধভাত বা মাংস-ভাতের আয়োজনও করেছেন চৌধুরী দম্পতি। তবে তাঁদের অনুযোগ, ‘‘আটার রুটি দিলে পোষ্য দু’টি খেতে চায় না। বালিশের তলায় লুকিয়ে রাখে।’’ ডাক্তার দেখিয়ে তাদের শারীরিক পরীক্ষাও করিয়েছেন তপনবাবুরা। সপ্তাহে একদিন করে শ্যাম্পু দিয়ে স্নানও করানো হয়। কিন্তু এত খরচায় অসুবিধে হচ্ছে না? তপনবাবুর সাফ কথা, ‘‘দরকার হলে দু’জন মিলে বেশি খাটব। তবু ওদের আমাদের কাছেই রাখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy