Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Jalpaiguri Storm

ঝড়ে দুর্গতদের বাড়ি তৈরি নিয়ে ‘অনিশ্চয়তা’

কমিশন ‘নো অবজেকশন’ বা ছাড়পত্রের চিঠি পাঠালে তাঁরা কাজ শুরু করতে পারবেন। কিন্তু সেই চিঠি এখনও তাঁদের হাতে আসেনি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১০:০৪
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়িতে দুর্গতেরা আদৌ জরুরি ভিত্তিতে পুনর্বাসন পাবেন কি না তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের দশ দিন পরে এখনও বিপর্যস্ত অঞ্চলের দুর্গতদের অনেকেই খোলা আকাশের নীচে ত্রিপল টাঙিয়ে রয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ শিবির করে দেওয়া হলেও দুর্গতদের অনেকেই সেখানে নানা কারণে থাকতে চাইছেন না। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের প্রশ্ন, কবে ভেঙে যাওয়া ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে? যদিও এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক নির্বাচনী জনসভায় জানিয়েছেন, নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি চালু থাকায় তিনি সরকারি ভাবে কোনও ঘোষণা করতে পারবেন না। কিন্তু, আইনি পরিকাঠামোর মধ্যে রাজ্য প্রশাসনের তরফে যাতে দুর্গতদের ঘর তৈরি করে দেওয়া যায়, সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে তিনি প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, তাঁর প্রস্তাব করা চিঠির কোনও জবাব তিনি পাননি।

অন্য দিকে, জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, তাঁদের কাছ থেকে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। তাঁরা এও জানাচ্ছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী ঘর করে দেওয়ার জন্য ছাড়পত্র চেয়ে কমিশনের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। কমিশন ‘নো অবজেকশন’ বা ছাড়পত্রের চিঠি পাঠালে তাঁরা কাজ শুরু করতে পারবেন। কিন্তু সেই চিঠি এখনও তাঁদের হাতে আসেনি। যদিও কমিশনের তরফের ব্যাখ্যা, কোনও বিপর্যয়ে আপৎকালীন ত্রাণ-পুনর্গঠনের প্রশ্নে ভোটের বিধি বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। কমিশনকে জানিয়ে সে সব করলেই চলে। তবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক প্রতিনিধি বা মন্ত্রী যুক্ত থাকতে পারেন না। একমাত্র আধিকারিকেরা সে কাজ করতে পারেন। কমিশনের এক কর্তার ব্যাখ্যা, প্রশাসন নিজে তো বাড়ি তৈরি করে দেবে না। বরং উপভোক্তাকে সেই টাকা দেবে। সে ক্ষেত্রে তা ক্ষতিপূরণের মতোই। ক্ষতিপূরণের যে মানদণ্ড থাকে সেই অনুয়ায়ী অর্থ কমিশনকে জানিয়ে দিলে কোনও সমস্যা থাকার কথা নয়। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘গার্ডেনরিচে বাড়ি ভাঙা-কাণ্ডের পরে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। তার আগে কমিশনকে জানানো হয়। তাতে কমিশন কোনও আপত্তি তোলেনি।’’

অন্য দিকে, ঝড়ের পরে দিন কয়েক আগে ঝড়-বিধ্বস্ত এলাকা সংলগ্ন ধূপগুড়িতে এলেও দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করেননি। এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষও করেছে তৃণমূল। সব মিলিয়ে তাঁরা অনিশ্চয়তার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ দুর্গতদের। তবে জেলা প্রশাসনের তরফে ওই এলাকায় বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করছে বলে খবর। প্রশাসনের তরফে এলাকায় এখন কিট বিলি চলছে। তাতে জামা-কাপড়, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, মশারি, কিছু খাবার, শিশুদের খাবার থাকছে। প্রশাসনিক আধিকারিকেরা এলাকায় যাচ্ছেন সে সব দেখভাল করতে।

এ দিকে, ওই অঞ্চলে ঝড়ের দাপটে কত বাড়ি-ঘর নষ্ট হয়েছে, তা নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। ঝড়ের পরে, প্রথম দিন জেলা প্রশাসন জানিয়েছিল, ২ হাজার ঘর ভেঙেছে। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী জলপাইগুড়িতে বলেছিলেন, ৫ হাজার বাড়ি ভেঙেছে। এখন মুখ্যমন্ত্রী এক জনসভায় জানিয়েছেন, তিন জেলা মিলিয়ে দেড় হাজার বাড়ি ভেঙেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rehabilitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE