Advertisement
E-Paper

কিছু কলেজে পুলিশ নেই, ‘দাদা’রাও নেই

ভর্তি নিয়ে অনিয়ম রুখতে গত শনিবারই পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার৷ সেই অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজে পুলিশ মোতায়েন হয়৷

পার্থ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৫
ভর্তির দিন: মনেই হচ্ছে না ভর্তির দিন। ছাত্রনেতাদের ভিড় নেই। ফেস্টুন-ব্যানার নেই। সোমবার কোচবিহারে কলেজের সামনে। নিজস্ব চিত্র

ভর্তির দিন: মনেই হচ্ছে না ভর্তির দিন। ছাত্রনেতাদের ভিড় নেই। ফেস্টুন-ব্যানার নেই। সোমবার কোচবিহারে কলেজের সামনে। নিজস্ব চিত্র

যে সব কলেজ চেয়েছে, পুলিশের প্রহরা রয়েছে শুধু সেখানেই৷ আর যারা চায়নি, সেখানে পুলিশও নেই৷ সোমবার আলিপুরদুয়ারে এই ছবিই দেখা গেল।

ভর্তি নিয়ে অনিয়ম রুখতে গত শনিবারই পুলিশকে কড়া নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকার৷ সেই অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজে পুলিশ মোতায়েন হয়৷ পাশাপাশি পুলিশের তরফে বিভিন্ন কলেজের গেটে ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়ে ভর্তি নিয়ে তোলাবাজির সম্মুখীন হলে তাদের কাছে ই-মেল, ফোন বা হোয়াট্‌সঅ্যাপে অভিযোগ জানাতে অনুরোধ করে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে প্রচার চালান হয়৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের তরফেও এমন একটি প্রচার শুরু হয়েছে৷

কিন্তু জেলার প্রায় কোন কলেজেই এখনও পর্যন্ত এমন ব্যানার বা ফেস্টুন লাগান হয়নি বলে অভিযোগ৷ পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজের সামনে এ দিন সকাল থেকে পুলিশের দেখা মিললেও, এর উল্টো ছবি ছিল আলিপুরদুয়ারে৷ হাতে গোনা একটি-দুটি কলেজ ছাড়া বাকি কোনও কলেজের গেটেই এ দিন পুলিশের দেখা মেলেনি বলেও অভিযোগ৷ তবে ভর্তি নিয়ে কোন সমস্যা রয়েছে কি না সে ব্যাপারে এক-দুটি কলেজে গিয়ে পুলিশ খোঁজ-খবর নেয় বলে কলেজগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে৷

বিরোধীদের দাবি, কিছু কলেজে যে পুলিশের দেখা মেলেনি, সেই সুযোগে নজরদারির অভাব হয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রছাত্রীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। তবে টিএমসিপি সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। টিএমসিপির জেলা সম্পাদক বাবলু করের বক্তব্য, ‘‘বিরোধীরা পায়ের তলায় মাটি না পেয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’

আলিপুরদুয়ার জেলায় দশটি কলেজ রয়েছে৷ রাজ্য সরকারের নির্দেশে সব ক’টি কলেজেই অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে৷ তবে এর মধ্যে শুধুমাত্র আলিপুরদুয়ার বিবেকানন্দ কলেজ ও কামাখ্যাগুড়ি শহীদ ক্ষুদিরাম কলেজের গেটে এদিন পুলিশের দেখা মিলেছে৷ তবে এদিনই প্রথম নয়, ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর দিন থেকেই এই দুই কলেজে পুলিশ রয়েছে৷ বিবেকানন্দ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোবিন্দ রাজবংশী বলেন, ‘‘প্রতিবারই পরীক্ষা ও ভর্তি চলার সময় আমরা আলিপুরদুয়ার থানায় পুলিশ চেয়ে আবেদন করি৷ সেই অনুযায়ী, থানা থেকে পুলিশ দেওয়া হয়৷ এবারও ভর্তির শুরু থেকেই কলেজে প্রতিদিন দুজন করে পুলিশ কর্মী থাকছেন৷’’

আলিপুরদুয়ার জেলার বাকি কোনও কলেজেই এদিন পুলিশ মোতায়েন ছিল না৷ একটি-দুটি কলেজে পুলিশ শুধু খোঁজ নিতে যায়৷ আলিপুরদুয়ার মহিলা মহা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অমিতাভ রায় বলেন, ‘‘ভর্তি নিয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা তা জানতে এ দিন থানা থেকে একবার পুলিশ এসেছিল৷’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ভর্তি নিয়ে অনিয়ম রুখতে আশপাশের জেলাতেও যখন কলেজে কলেজে পুলিশ মোতায়েন হয়েছে, আলিপুরদুয়ারের বেশিরভাগ কলেজে তা করা হল না কেন? আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদবের দাবি, ভর্তি নিয়ে অনিয়ম রুখতে রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে৷ কলেজে কলেজে পুলিশ মোতায়েনের কোন নির্দেশ দেয়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘ভর্তি নিয়ে যাতে কোন কলেজে অনিয়ম না হয় সেটা আমরা দেখছি৷’’

কিন্তু পাশের জেলা কোচবিহারের বিভিন্ন কলেজেও যেখানে পুলিশের তরফে কলেজের গেটে গেটে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে অনিয়ম চোখে পড়লে ছাত্র-ছাত্রীরা কোথায় কিভাবে অভিযোগ জানাবেন সে ব্যাপারে প্রচার চালান হচ্ছে, সেখানে আলিপুরদুয়ারের কলেজে কলেজে কেন এখনও পর্যন্ত সেই প্রচার শুরু হলনা? জেলার পুলিশ সুপার জানান, ‘‘সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আমরা এই প্রচার শুরু করেছি৷ সোমবার-মঙ্গলবারের মধ্যে সব কলেজেও এ ব্যাপারে প্রচার চালান হবে৷’’

College Admission Alipurduar Bribe আলিপুরদুয়ার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy