Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Businessmen

উত্তর চায় বিশেষ প্যাকেজ

ঘুরে দাঁড়াতে কেন্দ্রীয় সরকারের স্পেশ্যাল প্যাকেজ চাইছেন উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা। দিল্লির কাছেও এই দাবি নিয়েই চিঠি পাঠিয়েছে এই অঞ্চলের বণিকসভাগুলি।

নির্মলা সীতারমন।—ফাইল চিত্র

নির্মলা সীতারমন।—ফাইল চিত্র

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:০০
Share: Save:

নোটবন্দি, জিএসটি-র ধাক্কা পার হয়ে অর্থনীতি এখন ঝিমোচ্ছে। সারা দেশের সঙ্গে যার প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গেও। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হবে। তাতেও যে রাতারাতি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার মতো কিছু থাকবে, তেমন আশা কম। এই পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে কেন্দ্রীয় সরকারের স্পেশ্যাল প্যাকেজ চাইছেন উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা। দিল্লির কাছেও এই দাবি নিয়েই চিঠি পাঠিয়েছে এই অঞ্চলের বণিকসভাগুলি।

ফোসিন, সিআইআই, ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কর্মাস বা নর্থবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশনের মতো উত্তরবঙ্গের বণিকসভাগুলির তরফে এর মধ্যেই আলাদাভাবে তাঁদের দাবিগুলি নিয়ে দিল্লিতে লিখিতভাবে দরবার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে এই বণিকসভাগুলি জানিয়েছে: অর্থনীতির এই বেহাল দশায় ছোট ব্যবসায়ী থেকে কল-কারখানার মালিকেরা তাঁদের সংস্থা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। উৎপাদন বা ব্যবসা গত দু’বছর ধরে প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ কমেছে। বড় ব্যবসায়ীরা কোনও মতে সামলাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে অস্বিস্তের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। বহু ইউনিট বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে। কাজ হারাচ্ছেন শ্রমিক এবং কর্মীরা। এই ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গের সার্বিক পরিকাঠামো, চা বাগান, রেল, পর্যটন, শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলিতে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ এবং যথাযথ বরাদ্দ না হলে অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলানোর আশা দেখছেন না তাঁরা।

উত্তরবঙ্গের ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস জানান, ‘‘আমাদের উত্তরবঙ্গ এখনও দেশের পিছিয়ে পড়া ক্ষেত্র বলেই পরিচিত। অর্থনৈতিক মন্দার সঙ্গে এখানে বছরে নিয়মিত বন্যা, ধস, নদী ভাঙনের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় থাকে। তার সরাসরি প্রভাব পড়ে ব্যবসায়।’’ তিনি বলেন, ‘‘মন্দার জেরে পরিস্থিতি খুবই সঙ্গীন। উত্তরবঙ্গের জন্য বিশেষ নজর এবং স্পেশ্যাল প্যাকেজ প্রয়োজন।’’

ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, দেশের অনলাইন ব্যবসার দাপটে ছোট বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অবস্থা আরও খারাপ। মুদির দোকান থেকে বেকারি, চিঁড়ে-মুড়ি, সাবান, জেলি, আচার বা জ্যাম তৈরি, আবার ইস্পাত বা লোহার ফার্নিচার, গাড়ি-বাইকের শোরুম থেকে কাপড়ের ব্যবসায়ীর মতো অনেকে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পুজোর বাজার দেখেছেন। মানুষের হাতে খরচ করার মতো টাকা কমে যাওয়ায় তার ছাপ পড়েছে পুজো বাজারে। সঞ্চয়ে কোপ পড়ায় মানুষ খরচ কমিয়েছেন। ঋণ মিললেও ব্যবসা কমায় ব্যবসায়ীরা ভয় পাচ্ছেন, তা শোধ কী ভাবে হবে! নির্মাণ শিল্পেও কোপ পড়েছে। তাই খুচরো বাজার বা ব্যবসায় টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়াটা জরুরি।

এই সমস্যা মেটাতে উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের দিকে বিশেষ নজরের দাবি তুলেছেন সি‌আইআই-র নর্থবেঙ্গল জোনাল কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সঞ্জিত সাহা। তিনি জানান, ‘‘অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ছোট ও মাঝারি শিল্পে বাড়তি নজর দিতেই হবে। সহজ ঋণ, কম সুদ, ভর্তুকি এবং বাড়তি নজর প্রয়োজন। এতে বাজারে কর্মসংস্থান থেকে নগদ টাকার সরবরাহ বাড়তে বাধ্য। এটাই কোনওবার হচ্ছে না।’’

উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হয়েও উত্তরবঙ্গ কেন উত্তরের রাজ্যগুলির মতো সুবিধা পাবে না কেন্দ্রের কাছে, একই সঙ্গে সেই দাবিও তুলেছে বণিকমহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE