লড়াকু: রিঙ্কি মাঝি
স্বপ্ন ছিল স্বপ্না বর্মনের মতো বড় হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্নের শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে জলপাইগুড়ির অন্যতম উদীয়মান অ্যাথলিট রিঙ্কি মাঝি। শটপাট ও ডিসকাস ছোঁড়ায় নজর কেড়েছে জেলা স্তরে খেলা এই অ্যাথলিট। কিম্তু তার পরে মায়ের ক্যানসার ধাক্কা দিয়েছে তার স্বপ্নে। আত্মীয়-স্বজন ও পড়শিদের সাহায্যে কোনওমতে মায়ের চিকিৎসা হলেও, বাড়িতে আধপেটা খেয়েই দিন কাটছে নবম শ্রেণির রিঙ্কির।
জলপাইগুড়ি শহরটাকে পিছনে ফেলে রাজবাড়ি ছুঁয়ে বেশ কিছুটা এগোলেই জমিদার পাড়া। পাহাড়পুর পঞ্চায়েতের জমিদার পাড়ার মাটির রাস্তা ধরে ধান খেতের আলপথ দিয়ে কিছুদুর এগোতেই নজরে পড়ে ভাঙাচোরা ছোট্ট একটা কুঁড়েঘর। সেই ঘরেই ছড়ানো একগুচ্ছ মেডেল, সার্টিফিকেট আঁকড়ে বড় অ্যাথলিট হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে সে। রিঙ্কি বলে, ‘‘মায়ের গলায় ক্যানসার। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল লাগোয়া একটি ঘর ভাড়া করে রয়েছে।’’ মা বাসন্তী মাঝি বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে সংসার সামলেছেন। আরও দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। রিঙ্কির বাবা অশোক মাঝি অনেক দিন অন্যত্র সংসার পেতেছেন।
জলপাইগুড়ি শহরের পূর্বাঞ্চল উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রিঙ্কি। জেলা স্তর ছাড়িয়ে রাজ্য স্তরে খেলার সুযোগ পেলেও অর্থাভাবে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি সে।
সমস্যার কথা বলতে গিয়ে রিঙ্কির গলায় ঝরে পড়ে অভিমান। সে বলে, ‘‘রেশনের পোকা ধরা দু’টাকা কেজির চাল শুধু পাই। মা অসুস্থ জেনে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাতশো টাকা আর স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য পাঁচশো টাকা দিয়েছিলেন। আর কিছু পাইনি।’’ স্বপ্না বমর্ণের সঙ্গে দেখা করতে চায় রিঙ্কি। তার কথায়, ‘‘স্বপ্ন সফল করার জন্য সাহায্য চাইব দিদির কাছে।’’ বলতে বলতে রবিবারের পড়ন্ত বিকেলে চিকচিক করে ওঠে রিঙ্কির চোখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy