সুনীতিকুমার স্মরণে
সম্প্রতি জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের উদ্যোগে ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের একশো পঁচিশ বছর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়—‘ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় : জীবন ও কর্ম’। ভাষাতত্ত্বচর্চার ইতিহাসে সুনীতিকুমারের স্থান ঠিক কোথায়, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক অঙ্কুশ ভট্টের বক্তব্যে উঠে আসে তা। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ছাত্রী আরতি সিকদারের কাছ থেকে শোনা যায় অধ্যাপক সুনীতিকুমারের জীবনের নানান কথা। বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায় তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন, ভাষাতত্ত্বের দিকগুলো ছাড়িয়ে ভারতের সংস্কৃতির নানা দিকে সুনীতিকুমারের প্রজ্ঞার কথা। ভাষাচার্যের ঐতিহ্যপূর্ণ বসতবাড়িটি সংরক্ষণের অভাবে হাতছাড়া হয়ে যাবার কথাও তাঁর কাছ থেকে শোনা যায়। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি আনন্দগোপাল ঘোষের কথায়, ‘‘সুনীতিকুমার একমাত্র জাতীয় স্তরের বুদ্ধিজীবী, গবেষক ও লেখক যিনি বাংলা ভাষা নিয়ে চর্চা করেছেন এবং তাকে সর্বভারতীয় মানচিত্রে তুলে এনেছেন, যা তাঁর আগে আর কেউ করেননি।’’ 'কলেজের পক্ষ থেকে সুনীতিকুমারের একশো পঁচিশ বছর জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে বিশেষ ভাবে স্মরণ করা হয়েছে। সঞ্চালক ছিলেন অধ্যাপক প্রসাদ রায়। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপিকা কোয়েলা গঙ্গোপাধ্যায়, মিনতি দেবনাথ, কল্যাণ সিকদার, দিব্যজ্যোতি নিয়োগী।
লেখা ও ছবি : অনিতা দত্ত।
হরিমাধবের নির্দেশনায় ‘আহোত্রি’
কালিয়াগঞ্জের বিচিত্রা নাট্যসংস্থার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে পাঁচ দিন ধরে পালিত হল নাট্যোৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম দিন ছিল বিচিত্রার নিজস্ব প্রযোজনায় নাটক—‘আহোত্রি’। রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প ‘শাস্তি’ অবলম্বনে নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন হরিমাধব মুখোপাধ্যায়। ৫ এপ্রিল প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হল ‘থিয়েটারের সামাজিক ভাবনা এবং আজ’ শীর্ষক সেমিনার। মুখ্য আলোচক ছিলেন সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। আলোচনায় অংশ নেন প্রদোষ মিত্র, হারু মজুমদার, সুধাংশু দে, দেবব্রত দেবনাথ, তুহিনশুভ্র মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ, নরেন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তী। দ্বিতীয়ার্ধে মঞ্চস্থ হয় অনন্য থিয়েটারের নাটক— ‘বেওয়ারিশ’। রচনা শান্ত মজুমদার। পরিচালনায় বিভুভূষণ সাহা। তৃতীয় দিন, মনোজ মিত্র রচিত এবং নরেন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তী নির্দেশিত নাটক—‘চাক ভাঙ্গা মধু’ উপহার দেয় যাত্রিক নাট্যসংস্থা। সাত তারিখ পরিবেশিত হয় ‘হাঁদা গাধা পালিয়ে বেড়ায়’ । দুটি নিরক্ষর ছেলে বিবিধ ফন্দিফিকির খুঁজে গ্রাম থেকে শহরে আসে। নিরক্ষর হওয়ার জন্য শহরে বিভিন্ন সময়ে ধাক্কা খেতে খেতে লেখাপড়ার তাগিদ অনুভব করে এবং গ্রামে ফিরে আসে। অন্যজন নাট্যসংস্থার এই নাটকটির রচনা ও পরিচালনায় ছিলেন আবুল আলি। শেষ দিন ম়ঞ্চস্থ হয় নাটক—‘রামধনুর খোঁজে’। সুব্রত কাঞ্জিলালের রচিত নাটকটি বিষয় এক পরিবারের প্রকৃতিপ্রেমী একজন প্রতিবন্ধী মেয়ে এবং তাকে ঘিরে তার মা-বাবার সমস্যা। রায়গঞ্জের মালঞ্চ থিয়েটার প্রযোজিত এই নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন দেবব্রত দেবনাথ।
নববর্ষের বৈঠক
বালুরঘাটের মন্মথ নাট্যচর্চা কেন্দ্রে বৈশাখের প্রথম সকালে অনুষ্ঠিত হল নববর্ষের বৈঠক। আয়োজক দধীচী ও প্রত্যুষ পত্রিকা গোষ্ঠী। নাট্যব্যক্তিত্ব হরিমাধব মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক প্রকাশ চক্রবর্তী, সুধীর চন্দ্র সরকার, সাহিত্যিক দুর্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, চিকিৎসক রামেন্দু ঘোষ, ধীরেন্দ্রনাথ কুণ্ডুদের মগ্ন আলাপচারিতায় ঘুরে ঘুরে আসে নববর্ষ উদযাপনের স্মৃতিকথা— হালখাতা, ক্যালেন্ডার, কার্ড বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নববর্ষের উদযাপন। পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতির অবক্ষয়ের কথাও শোনালেন তাঁরা। আড্ডায় রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন শ্যামা সেন। ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি গেয়ে শোনান অজয় সাহা। অমরেন্দ্র মজুমদারের আবৃত্তি উপভোগ্য। পঞ্চমী ভাদুড়ি ও ঋতব্রত কুণ্ডুর পরিবেশিত সঙ্গীত শ্রুতিমধুর। শুভদীপ চৌধুরী ও শুভাশিস চক্রবর্তীর মতো নবীন প্রজন্মের কাছে শুনতে পাওয়া গেল ফেসবুক, টুইটারে বাংলা, বাঙালি এবং বাঙালিয়ানার হাল-হকিকত।
জন্মজয়ন্তী পালন
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমন্ডিতে রায় সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার ১৫০ তম জন্মজয়ন্তী পালিত হল ২৬ এপ্রিল। আয়োজক রাষ্ট্রীয় পঞ্চানন স্মারক সমিতি ও সার্ধ শতবর্ষ উদযাপন কমিটি। সকালে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা কুশমন্ডি ব্লক পরিক্রমা করে। সার্ধশতবর্ষ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সাংসদ বিজয়েন্দ্র বর্মণ। উদ্বোধনী সংগীতে ভাওয়াইয়া পরিবেশন করেন চিকিৎসক কৈলাশ চন্দ্র রায়। প্রধান অতিথি ছিলেন গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ,তরঙ্গপুর বিটি কলেজের অধ্যক্ষ কৃষ্ণকান্ত রায়, জীতেন্দ্রনাথ সরকার, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুনন্দা বিশ্বাস, অধ্যাপক দীপককুমার রায় সহ বিশিষ্টরা। বক্তারা পঞ্চানন বর্মার জীবনাদর্শ তুলে ধরেন। এরপর সংগীত ও নাটক মঞ্চস্থ হয়। অনুষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনায় ছিল বঙ্গীয় রাজবংশী ক্ষত্রিয় সমিতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy