ফাইল চিত্র।
দার্জিলিঙে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে নিগ্রহ এবং কর্মীদের মারধরের ঘটনার নিন্দা করেছেন পাহাড় সমতলের সব দলই। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁরা বলেছেন, এই ঘটনার জন্য বিজেপি-ও দায় এড়াতে পারে না। বিভিন্ন দলের নেতাদের অভিযোগ, পাহাড় নিয়ে বিজেপি দীর্ঘ দিন ধরে দ্বিচারিতা করে চলেছে। বিজেপি পাহাড়ের লোকজনকে নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংসদ নির্বাচনে জিতেছে। আবার সমতলে নেমে উল্টো কথা বলেছেন তাঁরা। পাহাড়ের দলগুলির নেতাদের দাবি, তিন মাসের উপর বন্ধ চললেও বিজেপি সাংসদ কিংবা অন্য নেতাদের দেখা মেলেনি। তাই এখন তাঁরা বিক্ষোভ-হেনস্থার মুখে পড়ে গিয়েছেন।
জাপের সভাপতি হরকা বাহাদুর ছেত্রী যেমন বলেন, ‘‘মারধর, হেনস্থার তীব্র নিন্দা করছি। এটা প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। কিন্তু বিজেপিও পাহাড়ে যা করছে, তাও তো দেখা দরকার। সাংসদের দেখা নেই। ভোট এলেই শুধু প্রতিশ্রুতি ছাড়া তো কিছু নেই।’’ তিনি জানান, তাঁরাও প্লার্কাড নিয়ে স্লোগান তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু মারধর সভ্যতা নয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আর অবাক লাগছে, এখন বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরিরা কোথায়? তাঁদের তো সাড়া শব্দ নেই।’’
তবে বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘বুধবার কালিম্পং ও বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙে যা হল তার জন্য রাজ্য সরকারই দায়ী। গোর্খারা কখনওই নিরস্ত্র ব্যক্তিকে আঘাত করে না, কিন্তু এই দিন তারা করেছে কারণ তারা আসলে তৃণমূল আশ্রিত গোর্খা।’’
কিন্তু বিজেপি পাহাড়ে দ্বিচারিতার ফল পেয়েছে বলে মনে করেন শিলিগুড়ি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তথা বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি চালাকি করতে গিয়েই এই অবস্থায় পড়েছে। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা নেই, বন্ধের সময় চুপচাপ বসে থেকেছে বিজেপি। এখন ভোট রাজনীতি করতে গিয়েছিল। তৃণমূলও একই ভাবে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।’’ তবে অশোকবাবুও দিলীপবাবুর মতো বিমল গুরুঙ্গের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য যদি মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে, তা হলে বিমল গুরুঙ্গের কী দোষ!’’
গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি বলেন, ‘‘মারধর প্রতিবাদের ভাষা নয়। আমরা এর নিন্দা করছি। তবে বিজেপি নেতৃত্বকেও পাহাড় নিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি মনে রাখা দরকার।’’
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। তিনি জানান, পাহাড়ের লোকেদের সংসদীয় নির্বাচনে আসন নিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তারপরে আর সংসাদকে দেখা যায়নি। অহলুওয়ালিয়ার বক্তব্য, ‘‘বন্ধ ছিল। তারপরে জ্বর হয় বলে পাহাড়ে যেতে পারিনি।’’ এদিন সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির হাসমিচকে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। তবে পুলিশি বাধায় দফতরের সামনের রাস্তা থেকে বেশিদূর এগোতেই পারেননি বিজেপি কর্মীরা। কোচবিহারেও এ দিন বিজেপি ক্ষোভ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy