প্রতীকী ছবি
একটা সময় ছিল, যখন ফোন বা ল্যাপটপে মুখ গুঁজে থাকলে জুটত কেবল বকুনি। কে জানত এই বিপদে সেই হবে সঙ্কট-দুঃখ- ত্রাতা! কে জানত এ যাত্রায় উদ্ধার করবে ইন্টারনেট! হল কিন্তু সেটাই। কোথাও ভিডিও কনফারেন্স, কোথাও আবার হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ। কোথাও নানা অ্যাপ। শহর তো বটেই। শহরের পাশাপাশি অনলাইনে ক্লাসে পাল্লা দিচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার বিভিন্ন স্কুলও। যার ব্যতিক্রম নয় কোচবিহার। সেখানেও জমিয়ে চলছে পড়াশোনা।
একাধিক স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, উৎসাহী হয়ে শিক্ষকদের অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে বিষয়ভিত্তিক ক্লাস নিচ্ছেন। স্কুল বা শিক্ষকদের ওই উদ্যোগে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের অনেকেই খুশি। তবে সমস্যাও আছে। পড়ুয়াদের অনেকের হাতে স্মার্টফোন নেই। ,পাশাপাশি নেট সমস্যা, পড়ুয়াদের আর্থিক সমস্যার মতো ছবিও চোখে পড়ছে গ্রাম-শহরে। তাই ভুরু কুঁচকেছেন অনেকে। কোচবিহার অভিভাবক সমিতির সভাপতি শিবেন রায় বলেন, “উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভাল। অনেকের সুবিধা হচ্ছে। তবে বহু পড়ুয়ার স্মার্টফোন নেই। নেট সমস্যা রয়েছে। আর্থিক অভাব আছে। সমস্ত পড়ুয়াকে কীভাবে যুক্ত করা যায় সেসবও কিন্তু ভাবতে হবে।”
একাধিক স্কুল কর্তারা ওই ব্যাপারে বিকল্প ভাবনার কথাও জানাচ্ছেন। কোচবিহার সদর গর্ভমেন্ট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মলয়কান্তি রায় বলেন, “নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ করে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। তাতে এখনও পঞ্চাশ শতাংশ ছাত্র যুক্ত হয়েছে। সবাইকে যুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। তারপরেও যারা বাইরে থাকবে, কোনও কারণে ক্লাস করতে পারবে না, তাদের অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে খামতি মেটানো হবে।” দিনহাটার গোপালনগর এমএসএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আক্কাস আলিও আশ্বাস দেন। তিনি বলেন,“বেশিরভাগই হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হয়েছে। বাকিরা শিক্ষকদের ফোন করলেই সহযোগিতা পাবে।” একই বক্তব্য পুন্ডিবাড়ি জিডিএল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রীতা ভট্টাচার্যেরও। বলেন, “ হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ করে আমরা দশম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছি। ভিডিও কনফারেন্সও হয়। ওই শ্রেণির প্রায় তিনশো ছাত্রীর মধ্যে ১৭৫ জনকে যুক্ত হয়েছে। বাকিদের জন্য ওই রেকর্ডিং রাখা হচ্ছে। স্কুল খুললে দেখানো হবে। কোনও অসুবিধা নেই।” নাটাবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত সেন বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় হেল্পডেস্ক নম্বরও দেওয়া হচ্ছে। কারও স্মার্টফোন না থাকলে, ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সঙ্গে ওই পড়ুয়ার সমন্বয় আমরাই করাব।” কোচবিহারের দেওয়ানহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত পাল, তুফানগঞ্জের মুগাভোগ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কৌশিক সাহাও এর ব্যতিক্রম নন। তাঁরাও অনলাইন ক্লাসে জোর দিচ্ছেন। জানান, লড়াই কঠিন। তাই জোরকদমে লড়তে প্রস্তুত সকলেই।
অনলাইন ক্লাসের গুরুত্ব মেনে নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদও। পর্ষদের কোচবিহারের প্রতিনিধি মিঠুন বৈশ্য বলেন, “সরকারি উদ্যোগে টিভিতে ক্লাস চালু হয়েছে। গোটা জেলার শিক্ষকেরা অনলাইন ক্লাস শুরু করেছেন। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের আরও সুবিধে হবে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। "
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy