Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
চম্পাসারি

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাজ বন্ধ, অচল বাজার

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলনকে ঘিরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজারে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শিলিগুড়ির চম্পাসারির পাইকারি বাজারে কর্মবিরতি শুরু করে আইএনটিটিইউসি।

বন্‌ধের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাস্তায় সব্জি ফেলে বিক্ষোভ ব্যবসায়ীদের। —নিজস্ব চিত্র।

বন্‌ধের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাস্তায় সব্জি ফেলে বিক্ষোভ ব্যবসায়ীদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৭
Share: Save:

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলনকে ঘিরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজারে।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শিলিগুড়ির চম্পাসারির পাইকারি বাজারে কর্মবিরতি শুরু করে আইএনটিটিইউসি। শ্রমিকেরা বাজার জুড়ে মিছিল শুরু করেন। বাজার ও আড়ত বন্ধ না করলেও বেচাকেনা হয়নি। ট্রাক থেকে মালও নামাতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।

দুপুর ৩টে নাগাদ আলোচনায় সমস্যা মিটতে চলতেই বেঁকে বসেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানিয়ে দেন, বাজার শ্রমিকদের ইচ্ছামত খুলছে, বন্ধ হচ্ছে। সরকারি হস্তক্ষেপ না দেখা পর্যন্ত তাঁরা মালপত্র কিনবেন না।

এতে বিপাকে পড়ে যান সব্জি ও ফলের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব এর দ্বারস্থ হন। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, বাজারের প্রায় ৮০০ গদিতে গোটা দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে কাঁচামাল আসে। সিকিম, নেপাল, ভুটান, উত্তরবঙ্গ-সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে সব্জি, ফল যায়। এক দিন বাজার বন্ধ থাকলে ১ কোটি টাকার মত লোকসান হয়। তৃণমূল নেতৃত্ব মুখে বনধ, অবরোধের বিরুদ্ধে বললেও আদতে কর্মবিরতির নামে সেটাই করছেন। গত মাসেই দু’ দিন শ্রমিকদের কর্মবিরতির জেরে ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, শালবাড়ির কিসান মান্ডিকে সচল করার জন্য অচলাবস্থা তৈরি করা হচ্ছে। শ্রমিকদের বক্তব্য, ‘‘মজুরি চুক্তি গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হয়েছে। দীর্ঘদিন মালিকরা টালবাহানা করায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’

সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকদের মজুরি চুক্তি গত বছর শেষ হয়েছে। সেটাও দেখতে হবে। তেমনিই, কোনও বাজার বনধ, অবরোধ, কাজ বন্ধ করা যাবে না। সব পক্ষকে বলে দিয়েছি, আলোচনা করেই সমস্যা মেটাতে হবে।’’ পাইকারি বাজারের সচিব সুব্রত দাস বলেছেন, ‘‘সব পক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আশা করছি, আজ শুক্রবারের মধ্যে সমস্যা মিটবে।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রতি বছর মজুরির ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়। বাজারে আসা কাঁচামাল নামানোর জন্য মালিকরা চাষিদের হয়ে শ্রমিকদের মজুরি দেন। বিক্রির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মজুরি দেন। মালিকেরা জানান, রীতি মেনে তিন পক্ষ বসে চুক্তি হয়। শিলিগুড়ি ফ্রুটস ও ভেজিটেবল কমিশন এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সচিব শিব কুমার বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বকর্মা পুজোর পর বসে চুক্তি করতে রাজি। কিন্তু শ্রমিকেরা গা জোয়ারি করে বারবার বাজার বনধ করছেন। আলোচনায় শ্রমিক সমস্যা মিটলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষেপে গিয়ে মালপত্র কেনা বন্ধ করে দেন।’’

বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজোর আগে এরদিন বাজার চলল না। আগেও দু’দিন হয়েছে। এ ভাবে তো ব্যবসা চলে না। তাই সমস্যা না মেটা পর্যন্ত আমরা মালপত্র কিনব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wage Wholesale market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE