Advertisement
E-Paper

কাজে কেন ঢিলে, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

একশো দিনের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “একশো দিনের কাজের খবর কী? খুব খারাপ তাই তো। বিডিওরা কী করছেন? কেন হয়নি।”

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫০
আলোচনা: প্রশাসনিক বৈঠকে বুধবার ডিজি-র সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

আলোচনা: প্রশাসনিক বৈঠকে বুধবার ডিজি-র সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

একশো দিনের কাজে পিছিয়ে পড়ায়, কোচবিহারের জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে একশো দিনের কাজে কোচবিহারের পরিসংখ্যানের কথা জানতে পেরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি। কেন একশো দিনের কাজে এই হাল তা নিয়ে জেলাশাসক কৌশিক সাহা থেকে শুরু করে একাধিক ব্লকের বিডিওদের কাছেও জানতে চান। কিন্তু কারও উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনের আধিকারিকদের স্পষ্ট ভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে ওই কাজ পঞ্চাশ শতাংশের বেশি নিয়ে যেতে। বর্তমানে জেলায় কাজ হয়েছে মাত্র ২৮ শতাংশ।

একশো দিনের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “একশো দিনের কাজের খবর কী? খুব খারাপ তাই তো। বিডিওরা কী করছেন? কেন হয়নি।” তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লক সভাপতি, মেখলিগঞ্জের দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলাশাসককে। প্রশাসনের কর্তাদের সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “জেলাশাসক নজর দিন। কেন মিটিং করে বলতে হবে। যারা কাজ করছেন না, তাঁদের করতে হবে। শীতলখুচি, তুফানগঞ্জ ১, দিনহাটা ১, দিনহাটা ২ থেকে কোচবিহার এক নম্বর ব্লকের একশো দিনের কাজ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

পরে কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া জেলার মাছ চাষে জলাশায় খননের কাজে একশো দিনের টাকা দেওয়ার অনুরোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একশো দিনের কাজে পিছিয়ে রয়েছে জেলা। সেখানে একশো দিনের কাজে জলাশয় খননের কাজ করতে হবে।”

পাশাপাশি কন্যাশ্রী প্রকল্প এবং স্কিল ডেভেলেপমেন্টের কাজ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে কেন ছাত্রীরা পাচ্ছেন না, সে প্রশ্ন তোলেন তিনি। জেলার এক কর্তা একশো দিনের কাজে ব্যাঙ্কের সমস্যার কথাও জানান।

পাশাপাশি, সীমান্ত পার দিয়ে যাতায়াত করছেন, সে বিষয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবালকে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রশ্ন করেন, হলদিবাড়িতে গ্রেনেড কোথা থেকে এল?

এ দিনের বৈঠকে কোচবিহারের উন্নয়ন নিয়ে সরব হন সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা।

সাবেক ছিটমহলের এগারোটি পরিবারের নাম ভোটার তালিকায় তোলার ব্যবস্থা, সেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ, সিতাইয়ে কলেজ ও গ্রামীণ হাসপাতালের পরিকাঠামো বাড়ানো, পাট্টা বিলি, মেখলিগঞ্জের উছলপুখুরিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের দাবিও ওঠে।

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, ওই বিষয়গুলিতে যতটা সম্ভব কাজ করা হবে।

মমতার এক ডজন

• ১ মার্চ নয়, ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যেই হাতে নেওয়া প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে।

•২ আগামী ৪ ডিসেম্বর, জেলাগুলিকে নিয়ে কলকাতায় প্রশাসনিক বৈঠক হবে। সেখানে কাজের গতির রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

•৩ কন্যাশ্রী, ১০০ দিনের কাজ, সবুজসাথী, কর্মতীর্থ, বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনা, স্কিল ট্রেনিং, অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সরকারি ভাতা বিলির কাজ বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে করতে হবে।

•৪ পঞ্চায়েত স্তর থেকে বিধায়ক, সাংসদ কোনও প্রকল্প, কাজের সমস্যা থাকলে জেলাশাসককে দ্রুত চিঠি দিন। জেলাশাসকে তা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠাবে।

•শীতের কুয়াশার মরসুমে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের বেশি জোর দিতে পুলিশকে নির্দেশ।

•আলিপুদুয়ার, কোচবিহার জেলায় সীমান্ত এলাকার ওয়াচটাওয়ার, নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ।

•সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারেন, এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে নজরদারি বাড়াতে হবে।

•তিস্তা বাঁধের প্রকল্পের একটি টেন্ডার ২৯ শতাংশ কমে বরাত দেওয়া নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

•ধূপগুড়ি, ইসলামপুরের বাইপাস এবং শিলিগুড়ি বর্ধমান রোডের চার লেন, আরওবির কাজ দ্রুত শুরু করাতে হবে।

•হাতির হানায় মৃত্যু, ফসল নষ্ট নিয়ে নবান্নের রিপোর্টের সঙ্গে বন দফতরের রিপোর্টে গরমিল থাকায় সমন্বয়ের নির্দেশ। দ্রুত ক্ষতিপূরণ বিলি করতে হবে।

•গজলডোবায় ভোরের আলো প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ।

•চা বলয়ে ২৩টি পানীয় জল প্রকল্পের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে।

Mamata Banerjee Siliguri 100 days work মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একশো দিনের কাজ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy