শয্যাশায়ী মেয়ের পাশে রত্নাদেবী। নিজস্ব চিত্র।
৪ বছর বয়স থেকেই শয্যাশায়ী, কিন্তু মেলেনি কোনও সরকারি সাহায্য। দুয়ারে সরকার, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পের সুবিধাও মিলছে না। তাই শয্যাশায়ী মেয়েকে নিয়ে বিপাকে বিধবা মা। রত্না বাঁসফোর নামের ওই মহিলা বন দফতরের কাজে যুক্ত। জলপাইগুড়ি জেলার মোড়াঘাট রেঞ্জ অফিসের আবাসিকে মেয়েকে নিয়ে থাকেন তিনি। রত্নার মেয়ে কল্পনা বাঁসফোরের বর্তমান বয়স ২৮ বছর। তবে দেহের আকৃতি এবং গঠন দেখে বোঝা মুশকিল, তাঁর বয়স ২৮ না কি ৮ বছর।
জানা গিয়েছে, কল্পনা জন্মের পর বাকি শিশুদের মতোই স্বাভাবিক ছিলেন। কিন্তু ৪ বছর বয়সে এক জ্বরের পর থেকেই ধীরে ধীরে পঙ্গু হতে শুরু করেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেহের আকৃতি বদলাতে থাকে তাঁর। হাত পা বেঁকে যেতে থাকে। আর্থিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও চিকিৎসার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা চালাতে থাকেন রত্না। কিছু দিন আগে স্বামীকে হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে যান তিনি। তবে মেয়ের সেবা যত্নে কোনও খামতি পড়েনি।
এ দিকে রাজ্য সরকারের তরফে ‘দিদিকে বলো’, ‘দুয়ারে সরকার’, ‘স্বাস্থ্যসাথী’-সহ একাধিক প্রকল্প চলছে। এই সব প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে অনেকে উপকৃত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। কিন্তু এগুলি কোনও কাজে আসেনি রত্নার।
গ্ৰাম পঞ্চায়েত এলাকার দুয়ারে সরকার শিবিরগুলোতে উপচে পড়ছে সাধারণ মানুষের ভিড়। দুয়ারে সরকার প্রকল্পে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বানানোর জন্য গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বলে অভিযোগ রত্নার। রত্মা বললেন, ‘‘আমি বন দফতরে কাজ করি। তাই নাকি স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাব না। কিন্তু বনকর্মী হিসাবে আমি আর কত টাকা পাই!’’ কাজ শেষে ঘরে ফিরতেই মেয়েকে দেখে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে যায় রত্মার। কান্নাভেজা গলায় তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটা সারা দিনরাত বিছানায় শুয়ে কাটায়। ওর জন্য কিছুই করতে পারলাম না। প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেটটাও টাকা দিয়ে বানিয়েছি। ৪ বছর বয়সে জ্বর হয় মেয়ের। সেই যে বিছানা নিয়েছে, আর ওঠেনি। স্বামী নেই, তাই আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। টাকার জন্য মেয়ের চিকিৎসা ভাল ভাবে করাতে পারিনি।’’ এই মুহূর্তে মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে ওই বিধবা মহিলার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy