নিজেদের উদ্যোগে ব্ল্যাক রাইস চাষ করেছেন স্বপ্না চন্দ, কিরণ বর্মণের মতো কোচবিহারের একদল মহিলা। এবার সেই মহিলারাই নিজেদের জমির ব্ল্যাক রাইস বা ‘কালো ভাতের’ পায়েস বিক্রি করতে কলকাতা সরস মেলায় হাজির থাকছেন। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্ল্যাক রাইস বিপণনের ওই সুযোগ পেয়ে তাই খুশি তাঁরা।
বৃহস্পতিবার মেলার প্রথমদিনে ব্ল্যাক রাইসে তৈরি পায়েসের ভাল সাড়া মেলায় আশা বেড়েছে তাঁদের। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সরস মেলায় ‘কালো নুনিয়া’ চাল নিয়ে এ দিন ক্রেতাদের যথেষ্ঠ উৎসাহ লক্ষ করা গিয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “আমরা তো এমনটাই চেয়েছিলাম। চাহিদা বাড়লে ব্ল্যাক রাইস চাষে উৎসাহ বাড়বে। মহিলাদের বিকল্প আয়ের সুযোগও বাড়বে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্কে ওই সরস মেলা হচ্ছে। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত মেলা চলবে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের উৎপাদিত নানা সামগ্রী বিক্রি এবং বিপণনেরর সুযোগ বাড়াতেই এই মেলার উদ্যোগ। কোচবিহারের একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ওই মেলায় স্টল রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ব্ল্যাক রাইসে তৈরি পায়েস বিক্রির স্টল।
সরস মেলায় হাজির এমনই একটি গোষ্ঠীর সদস্য জিরানপুরের বাসিন্দা কিরণ বর্মণ বলেন, “মাত্র পাঁচ কাঠা জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্ল্যাক রাইস চাষ করেছিলাম। ভাল ফলন পেয়েছি। কলকাতা সরসে, পায়েস বিক্রির মাধ্যমে জেলার কালো চালের পরিচিতিও বাড়বে বলে আমাদের আশা।” দেওয়ানহাটের বাসিন্দা স্বপ্না চন্দ বলেন, “এক বিঘে জমিতে ব্ল্যাক রাইস চাষ করেছি। পরিবারের লোকেরাও সাহায্য করেছে। স্থানীয় বাজারে চাহিদা আছে। তবে জেলার বাইরের বাজার ধরা জরুরি। কলকাতা সরস মেলায় ব্ল্যাক রাইসের পায়েস বিক্রি তাতে সহায়ক হবে।”
জেলা গ্রামোন্নয়ন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং সরসে পিঠে তৈরিতে দক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্যদের পাঠানো হয়। সেখানে রকমারি পিঠের ভাল ব্যবসা হয়েছে। কলকাতা সরসে নতুন কিছু তুলে ধরতেই ব্ল্যাক রাইসের পায়েসের উপর জোর দেওয়া হয়। গ্রামোন্নয়ন শাখার প্রোজেক্ট ম্যানেজার পৃথা পন্ডি নিজে ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্যদের সঙ্গে কলকাতায় গিয়েছেন।
মোবাইলে তিনি বলেন, “সরস মেলায় জেলার ব্ল্যাক রাইসের পায়েসের স্টল এবারই প্রথম। সেটাই ভোজন রসিকদের অনেক বেশি মন কেড়েছে।”
জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় জানান, জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে সাত বিঘে জমিতে ব্ল্যাক রাইস চাষ সফল হয়েছে। ফলন হয়, প্রায় সাড়ে তিন মেট্রিক টন। দাম মোটামুটি ১৫০ টাকা প্রতি কেজি। অনলাইনে ওই ধান বিক্রির ব্যাপারে চেষ্টা হচ্ছে। গবেষকদের একাংশের দাবি, সুগন্ধি ওই চাল পুষ্টিকর, আয়রণযুক্ত।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্য বলেন, ‘‘পায়েস রান্না করার আগে ওই চাল প্রায় ২৪ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখাটা জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy