Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Kohinoor

Tea Garden: প্রধানের বাড়িতে ভাঙচুর শ্রমিকদের

বাগানের মালিকানা নিয়ে দুই চা ব্যবসায়ীর মধ্যে অনেকদিন ধরেই আইনি লড়াই চলছে। মালিকানা নিয়ে সেই গোলমালের জেরে আগেও বাগানে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

তছনছ: হামলার পর কোহিনুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নীলম মণ্ডলের বাড়ি। আলিপুরদুয়ারে রবিবার। নিজস্ব চিত্র

তছনছ: হামলার পর কোহিনুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নীলম মণ্ডলের বাড়ি। আলিপুরদুয়ারে রবিবার। নিজস্ব চিত্র

রাজু সাহা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২১ ০৭:২৪
Share: Save:

মালিকানা নিয়ে গোলমালের জেরে ফের একবার উত্তাল হয়ে উঠল ডুয়ার্সের কোহিনুর চা বাগান। রবিবার সন্ধ্যায়, বাগানের বর্তমান পরিচালক ওমপ্রকাশ উপাধ্যায়কে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। তার ফলে সেখানে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কোহিনুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান নীলম মণ্ডলের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত শ্রমিকরা। ওই বাড়িতে থাকা নীলমের স্বামী তথা বিজেপির ট্রেড ইউনিয়ান নেতা কিশান মণ্ডলের দু’টি মোটরবাইকেও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওমপ্রকাশকে ছাড়াতে রাতে একের পর-এক ট্রাক্টরে বোঝাই হয়ে শ্রমিকরা শামুকতলা থানার সামনে আসতে শুরু করেন। কিন্তু শ্রমিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শামুকতলা থানায় ওমপ্রকাশকে রাখা হয়নি। পরিস্থিতি সামলাতে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ কর্তাদের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী শামুকতলা থানায় ছুটে যান। তৃণমূল নেতারা শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

সূত্রের খবর, কোহিনুর বাগানের মালিকানা নিয়ে দুই চা ব্যবসায়ীর মধ্যে অনেকদিন ধরেই আইনি লড়াই চলছে। মালিকানা নিয়ে সেই গোলমালের জেরে আগেও বাগানে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাইকোর্টের একটি নির্দেশের ভিত্তিতে মাস দু’য়েক আগে শামুকতলা থানার পুলিশ বাগান পরিচালনার ভার বদলের কথা বলতে গেলে, বর্তমান পরিচালককে গ্রেফতার করা হবে ভেবে পুলিশ আধিকারিকদের বাগানের একটি অফিসে আটকে রাখেন ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। কিছুদিন আগে বিজেপি সাংসদ তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা কোহিনুর বাগানে গেলে তাঁকেও শ্রমিকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় বার্লার সঙ্গে বিজেপি ট্রেড ইউনিয়ান নেতা কিশান মণ্ডলও ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় বাগান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তেঁতুলতলার একটি ধাবায় বসে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন বাগানের বর্তমান পরিচালক ওমপ্রকাশ উপাধ্যায়। শ্রমিকদের অভিযোগ, সেই সময় সেখান থেকেই পুলিশ তাঁকে ধরে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাগানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিশান ও নীলম মণ্ডলদের বাড়িতে চড়াও হন শ্রমিকরা। অভিযোগ, বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই ওমপ্রকাশকে ছাড়ার দাবিতে শামুকতলা থানার সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন শ্রমিকরা।

আলিপুরদুয়ারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওমপ্রকাশ উপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সেজন্যই তাঁকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।’’ বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কিশান বা নীলমকে ফোন পাওয়া যায়নি।

তবে কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও নেতার যোগ নেই। আমাদের প্রধানকে নিজেদের দলে টানতে তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনার সঙ্গে তাঁকে জড়িয়ে দিয়েছে।’’

তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক সভাপতি পরিতোষ বর্মণ বলেন, ‘‘বর্তমান পরিচালক কোথায় রয়েছেন, সেই খবর পুলিশকে ওই বিজেপি নেতা দিয়েছেন— এমন সন্দেহেই তাঁর বাড়িতে কিছু লোক আক্রোশের বশে আক্রমণ করেন বলে শুনেছি। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’ আলিপুরদুয়ার ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা অনুপ দাস বলেন, ‘‘শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে পুলিশের সঙ্গে রাত পর্যন্ত আলোচনা চলেছে।’’

এ দিকে শ্রমিকরা জানিয়ে দিয়েছেন, দ্রুত ওমপ্রকাশকে ছাড়া না হলে বড় আন্দোলন হবে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও যাবেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Garden Kohinoor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE