প্রহার: চোর সন্দেহে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে কিশোরকে গণধোলাই। জলপাইগুড়ি শহরে। নিজস্ব চিত্র
ফিরে এল গণধোলাইয়ের আতঙ্ক। চোর অভিযোগে এক কিশোর গণপ্রহারের শিকার হল খাস জলপাইগুড়ি শহরেই। কাঁদতে কাঁদতে ওই কিশোর বলতে থাকে, ‘‘আমি চুরি করতে ঢুকিনি। মোবাইল রিচার্জ করার জন্যই দোকানে ঢুকেছিলাম।’’
ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দোকানে ঢুকে সে টাকা চুরি করেছে। বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে তাকে গণধোলাই দিতে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বুধবার জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন সংলগ্ন পাতকাটা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ দিন দুপুরে ওই এলাকার মিন্টু দে নামের এক ব্যবসায়ীর মুদি দোকানে ঢুকে অভিযুক্ত কিশোর টাকা চুরি করে বলে অভিযোগ। সে কথা ছড়িয়ে পড়তেই ওই কিশোরকে পিছমোড়া করে নাইলনের দড়ি দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে গণধোলাই শুরু হয়। পথ চলতি মানুষেরাও এসে লাথি, ঘুঁষি, চড় মেরে যেতে থাকে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে কিশোরের। কিন্তু কান্নাকাটি করেও ছাড় মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি দু’জন মিলে চুরির ষড়যন্ত্র করেছিল ওই যুবকেরা। এক জন পালিয়ে গিয়েছে। মিন্টু বলেন, ‘‘আমি দোকান খুলে রেখে পাশের বাড়িতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা চুরি করছিল ওই কিশোর। হাতেনাতে ধরে ফেলি। সামান্য মারধর করতেই কিছু টাকা ফেরত দেয়।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভিযুক্তকে সামান্য মারধর দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কিশোরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত কিশোরের বিরুদ্ধে এর আগেও চুরির অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
আইনজীবী কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অত্যন্ত অমানবিক ঘটনা। আইনের চোখে গুরুতর অপরাধ এই ধরনের গণধোলাই। আইন কখনও কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy