Advertisement
E-Paper

সন্তান ও স্ত্রীকে খুন করে ধৃত স্বামী

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে পিন্টুর সন্দেহ ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৪
শোক: লক্ষ্মীর পরিবার। নিজস্ব চিত্র

শোক: লক্ষ্মীর পরিবার। নিজস্ব চিত্র

আট মাসের শিশুপুত্র ও স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে এনজেপি থানা এলাকার গোড়া মোড়ের ঘটনা। নিহত মহিলার নাম লক্ষ্মী রায় বসাক (২৫) আর শিশুর নাম রাজ বসাক। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে খুনে অভিযুক্ত স্বামী পিন্টু বসাককে। জোড়া মৃত্যুর কথা জানাজানি হতে পিন্টুকে মারধর করেন উত্তেজিত এলাকাবাসীর একাংশ। পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন পিন্টু। যে বাড়িতে পিন্টুরা ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির মালিক তপন রায়ের স্ত্রী রীতাদেবীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পিন্টুর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে পিন্টুর সন্দেহ ছিল। তার জেরে গত কয়েক মাসে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি বেড়ে গিয়েছিল। পড়শিদের দাবি, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার। সেদিন ভাত রান্নার জন্য পিন্টুকে চাল আনতে বলেছিলেন লক্ষ্মী। পিন্টু চাল আনতে রাজি না হওয়ায় গোলমাল চরমে ওঠে। পুলিশের সন্দেহ সেই ঝামেলার ফলেই শ্বাসরোধ করে দু’জনকে খুন করা হয়েছে। ডিসি গৌরব লাল বলেন, ‘‘একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে।’’

তপনবাবুর স্ত্রী রীতা জানান, মাঝেমধ্যেই বাড়িতে থাকতেন না পিন্টু। রীতাদেবীর অভিযোগ নেশা করা এবং জুয়া খেলার জন্য পরিবারে অশান্তি লেগেই ছিল। রীতার কথায়, ‘‘শনিবার দিন সকালে আমি উঠে ওদের দরজা খোলা দেখে লক্ষ্মীকে ডাকতে যাই। দেখি সে মশারি জড়িয়ে মেঝেতে পড়ে রয়েছে। অনেক ডাকাডাকির পরেও উঠল না। তখন ওর স্বামীকে জিজ্ঞাসা করতে সে জানিয়েছিল, লক্ষ্মীর মস্তিকে সমস্যা হয়েছে।’’ সন্দেহ হওয়ায় তখনই অন্য ভাড়াটেদের ডেকে বিষয়টি জানান রীতাদেবী।

লক্ষ্মীর মা পূর্ণিমাদেবীর দাবি, তাঁর মেয়েকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা আনার জন্য চাপ দেওয়া হত, মারধরও করা হত। এর আগে একবার এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং পড়শিদের নিয়ে মীমাংসা হয় বলে তাঁর দাবি। ওই দম্পতির এক মেয়ে কয়েকদিন ধরে মামার বাড়ি ছিল। লক্ষ্মীর ভাই উত্তম জানান, শুক্রবার রাতে দিদির বাড়ি রান্না হয়নি জানতে পেরে তিনি অন্য মেয়েটিকেও রাতেই নিয়ে আসে। তাঁর কথায়, ‘‘এক ভাগ্নীকে রাতে না নিয়ে গেলে তাকেও হয়তো মেরে ফেলা হতো। পিন্টুর কড়া শাস্তি চাই।’’ দম্পতির দুই মেয়ে আপাতত মামার বাড়িতেই রয়েছে। ভাড়াবাড়ির ঘরটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলবাড়ি এক নম্বর পঞ্চায়েতের ঠাকুরনগরের বাসিন্দা পিন্টুর সঙ্গে আমবাড়ির বাসিন্দা লক্ষ্মীর বিয়ে হয়েছিল ৪ বছর আগে। রাজ ছড়াও তাঁদের আরও দু’টি মেয়ে রয়েছে রিয়া এবং পিয়া। তারা যমজ। পিন্টু কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। পড়শিদের একাংশের অভিযোগ, পিন্টু নিয়মিতভাবে নেশা করতেন। তাঁর জুয়া খেলার অভ্যেসও ছিল। ঠাকুরনগরে পিন্টুর বাবার বাড়ি। মাস আটেক ধরে গোড়া মোড়ে তপন রায়ের বাড়িতে ভাড়া ছিলেন পিন্টু ও তাঁর পরিবার।

Murder Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy