Advertisement
E-Paper

১০ ঘণ্টা পড়ে থেকে মৃত্যু যুবকের

শিবকমলের স্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, তেমন কিছু হয়নি। নেশা কাটলেই ঠিক হয়ে যাবে। তবুও আমরা বাড়ির লোকজন দু’জনকে ওয়ার্ডে নিয়ে মেঝেয় শুইয়ে দিই।’

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৪৩
শোক: শিবকমলের পরিবার। নিজস্ব চিত্র

শোক: শিবকমলের পরিবার। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসা না করে প্রায় ১০ ঘণ্টা ফেলে রাখায় মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায় জখম এক মোটরবাইক চালকের। এমনই অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শিবকমল মোহান্ত (৩৩)।

তাঁর স্ত্রী বেবি হাসপাতাল সুপারকে করা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, বিনা চিকিৎসায় তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। রাতে মেডিক্যালে পৌঁছনোর পরে কোথায়, কী ভাবে অপেক্ষা করেছেন। ডাক্তার, নার্সরা কী ভূমিকা নিয়েছিলেন অভিযোগপত্রে সেসব লিখে তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন বেবি।

পেশায় দিনমজুর শিবকমলের বাড়ি চোপড়ার পাগলিগছে। ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন সকালে ভাগ্নে ভাগ্যরামের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে দুপুরে ফেরার সময়ে বিধাননগর থানার ঘোষপুকুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁর বাইক রাস্তার ব্যারিকেডে ধাক্কা মারলে দু’জনে ছিটকে পড়েন। আত্মীয়দের কয়েকজন জানান, কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। শিবকমলের মাথা ফাটে, বুকেও চোট লাগে। আর ভাগ্যরামের কাঁধে চোট লাগে। বিধাননগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে দু’জনকেই মেডিক্যাল কলেজে ‘রেফার’ করা হয়। এ দিন জখম ভাগ্যরাম সিংহকে জরুরি বিভাগ থেকে অন্য ওয়ার্ডে সরিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ভাগ্যরাম জানান, মেডিক্যালে জরুরি বিভাগে পৌঁছনোর পরে প্রথমে ‘মদ খাওয়ার জন্য হুঁশ গিয়েছে’ বলে জানান এক চিকিৎসক। শিবকমলের স্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, তেমন কিছু হয়নি। নেশা কাটলেই ঠিক হয়ে যাবে। তবুও আমরা বাড়ির লোকজন দু’জনকে ওয়ার্ডে নিয়ে মেঝেয় শুইয়ে দিই।’’ তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, জখম শিবকমলকে ওষুধ, স্যালাইন, অক্সিজেন দেওয়া দূরের কথা, কোনও চিকিৎসক বা নার্স গায়ে হাত দিয়ে পরীক্ষাও করেননি। অভিযোগপত্রে বেবি লিখেছেন, তাঁর স্বামীর মুখ, গাল থেকে রক্ত মোছানোর জন্য নার্সকে বললেও সাড়া মেলেনি। তাঁর কথায়, ‘‘রাত আড়াইটে নাগাদ আমার স্বামীর টান ওঠে। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বার হলে চেঁচামেচি করি। তখন ডাক্তার এসে বুকে চাপ দিতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বলা হয়, উনি মারা গিয়েছেন।’’ দুই ছেলেমেয়ের সংসারে উপার্জনকারী বলতে ছিলেন শিবকমলই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে সুপার জেনেছেন, ওই রোগীকে ওষুধ, স্যালাইন কিছুই দেওয়া হয়নি। অন্য ওয়ার্ডে পাঠিয়ে বিশেষজ্ঞদের অধীনে চিকিৎসার ব্যবস্থাও হয়নি। সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘গুরুতর অভিযোগ। এরকম রোগী এলে যা যা করণীয় তা করা হলে এমন অভিযোগ উঠত না। দ্রুত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’

Medical Negligence Road Accident Bike Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy