এক তরুণীকে কটূক্তির প্রতিবাদ করায় দুই যুবকের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়ে খুন হলেন এক সিপিএম নেত্রীর ছেলে। বুধবার রাতে শিলিগুড়ির ভক্তিনগরের রাজফাপড়ি এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, ওই ঘটনায় মারধর করা হয় নিহতের বন্ধু এক বিএসএফ জওয়ানকেও। নিহত বিক্রমের সুব্বার (৩৮) মা বীণা সুব্বা তিনবার শিলিগুড়ি লাগোয়া ডাবগ্রাম ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। বাম আমলে একবার জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সদস্য হন। বীণাদেবীর স্বামী বীরবল সুব্বাও এলাকার সিপিএম নেতা হিসেবে পরিচিত। বিক্রম সরাসরি কোনও দল না করলেও এলাকার যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন। কোথাও কোনও গোলমাল বা সমস্যা হলে আগ বাড়িয়ে গিয়ে প্রতিবাদও করতেন। কয়েক মাস আগেও এক রেস্তোরাঁর মধ্যে অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। পরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মেটানো হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তরা সকলে এলাকার সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাঁদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত ওয়াংদি শেরপার বিরুদ্ধে এলাকায় ক্ষোভও রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর প্রতিপত্তি বাড়ছিল এলাকায়। বিক্রমের খুনের পরে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে শুরু করে এলাকার লালি গুরাস সুধার সমিতি নামে পরিচিত সমাজের কর্তা ব্যক্তিরাও। লোকসভা ভোটের সময়েও ওই অভিযুক্তদের বাড়বাড়ন্ত চোখে পড়েছিল। তাই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বেশ কিছু বাসিন্দাদের। রাতের ঘটনার পর অভিযুক্তদের দুই সঙ্গীকে ধরেছে পুলিশ। তার মধ্যে ওয়াংদির ভাইও রয়েছে। এ দিন কান্নার মাঝে এলাকার প্রাক্তন প্রধান বীণাদেবী বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে তৃণমূলের ওরা মেরেছে। ছেলেটাকে কেউ বাঁচাল না। আমি সকলের শাস্তি চাই।’’
যদিও এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব এর সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরোটাই ব্যক্তিগত। তবে আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত থেকে বাড়াবাড়ি করা চলবে না। পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলছি। আমরা সিপিএমের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাব।’’ বৃহস্পতিবার সকালে বীণার বাড়িতে যান জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকার ও একাধিক মেয়র পারিষদ। জীবেশবাবু বলেন, ‘‘বিক্রম খুবই জনপ্রিয় ছেলে ছিল। অভিযুক্তরা শাসকদলের ছায়ায় থেকে এলাকার দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। আমরা পুলিশকে বলেছি, সবাইকে যেন ধরা হয়। আজ, শুক্রবার থানাতেও স্মারকলিপি দেব।’’