হাসপাতালে বাপ্পাদিত্য মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
মদের ঠেক থেকে পথ চলতি মহিলাদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এক যুবক। সেই অপরাধে মঙ্গলবার রাতে মালদহের ইংরেজবাজার থানার অমৃতি এলাকায় তাঁকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চার জনের বিরুদ্ধে। বর্তমানে আহত যুবক বাপ্পাদিত্য মণ্ডল মালদহ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। তিনি এ বারই মালদহ কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছেন। তাঁর বাড়ি ইংরেজবাজার থানার ফুলবাড়িয়া গ্রামে। বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন বাপ্পাদিত্য। আহত যুবকের পরিবারের তরফে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়েনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় সন্ধ্যের পর বেশ কয়েকটি মদের আসর বসে। এ দিন রাতে বাপ্পাদিত্য সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় একটি মদের ঠেক থেকে মহিলাদের উদ্দেশ্যে কটু মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় ওই যুবকেরা বাপ্পাদিত্যের উপর চড়াও হয়। রাস্তায় ফেলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। এমন পরিস্থিতি দেখে স্থানীয়েরা ছুটে গেলে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়। এর পরেই যুবককে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযুক্ত যুবকদের চিহ্নিত করতে পারেননি বাপ্পাদিত্য।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কম্পিউটার মেরামতির কাজ করতে এ দিন তিনি অমৃতি গিয়েছিলেন। তাঁর বাবা পরশুরাম মণ্ডল দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁরা দুই ভাই বোন। বোন মালদহ কলেজে ইংরেজি অর্নাসের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মা কল্পনাদেবী বাড়িতে সেলাই মেশিনের কাজ করেন। এ দিনের ঘটনায় কল্পনাদেবী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব সাধারণ পরিবারের। কষ্ট করে ছেলে মেয়েদের মানুষ করেছি। এ দিন হঠাৎ শুনি ছেলেকে কারা মারধর করেছে। মেয়েদের খারাপ কথা বলায় আমার ছেলে তার প্রতিবাদ করেছিল। তাই সে আজ মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি।’’ বাপ্পাদিত্যের দাবি, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় আমি রক্ষা পেয়েছি।’’
এলাকায় মদের আসর নিয়মিত বসছে বলে অভিযোগ করেছেন অমৃতির গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের বিনিকুমার মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন ঠিক কী হয়েছিল আমি বলতে পারব না। তবে এলাকায় নিয়মিত মদের ঠেক বসছে। দু’-তিনটি বেআইনি মদের দোকান রয়েছে। সেখানেই আসর বসছে। ফলে বাইরে থেকে মানুষের আনাগোনা হচ্ছে। পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। পুলিশের উচিত বিষয়টি গুরুত্ব দেখা।’’ ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযান আরও বাড়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy