হাসপাতালে তরুণের দেহ নিজস্ব চিত্র।
সালিশি বসিয়ে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। তার জেরেই মানসিক চাপে গলায় ফাঁস দিয়ে তরুণ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সালিশির অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের মনকুট বাঁধ এলাকায়। ২০ বছরের তরুণ মানিক মণ্ডলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল গ্রামেরই এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীর। রবিবার গ্রামের এক বাগানে দু’জনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় একদল মাতব্বর দেখে ফেলেন বলে খবর। তার পরেই গ্রামে বসে সালিশি সভা। মানিকের পরিবারের অভিযোগ, মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আশিস মণ্ডলের নেতৃত্বে এই সালিশি সভা হয়। সেখানে বিয়ের নিদান দেওয়া হয় যুগলকে। এমনকি জোর করে স্থানীয় এক মন্দিরে তাদের বিয়েও দিয়ে দেন মাতব্বররা। মানিকের মা শ্যামলী মণ্ডল এই বিয়েতে আপত্তি জানান। কিন্তু কোনও কথা শোনেননি মাতব্বররা।
সোমবার সকালে ঘর থেকে মানিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই প্রসঙ্গে মানিকের দাদা তুষার মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার বাবা অন্য রাজ্যে কাজ করেন। তাই আমরা বলেছিলাম এখন বিয়ে না দিতে। কিন্তু ওরা শোনেনি। পঞ্চায়েতের সদস্য আশিস মণ্ডল ও বাকিরা জোর করে বিয়ে দেয়। তাই নিয়ে বাড়ির কেউ খুশি ছিল না। সকালে দেখি ভাইয়ের ঘরের দরজা বন্ধ। দরজা ভেঙে দেখি ভাইয়ের দেহ ঝুলছে। জোর করে বিয়ে দেওয়ার জন্য মানসিক চাপে আত্মঘাতী হয়েছে ভাই।’’
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা আশিস। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের লোকেরা বলেন আলোচনা করে মিটিয়ে নিতে। গ্রামের প্রায় দেড়শ লোক ছিল সেখানে। পরিবারই সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ের। আমাদের তরফে কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। আমি তো শুনেছি বাড়ির লোকেরা তরুণের উপর অত্যাচার করত। পরিবারের চাপেই তরুণ আত্মহত্যা করেছেন। এই মৃত্যুর জন্য পরিবার একমাত্র দায়ী। অন্য কেউ দায়ী নন।’’
এই ঘটনায় উত্তেজনা ছ়ড়িয়েছে এলাকায়। খবর দেওয়া হয়েছে পুলিশে। মানিকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে মানিকচক থানার পুলিশ। যদিও এখনও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy