Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ম্যাচ দেখার আগেই মৃত্যু গোপালের

টিভিতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে হবে। অথচ রবিবার দুপুর থেকেই এলাকা ছিল বিদ্যুৎহীন। রাস্তার পাশে ট্রান্সফর্মারের ফিউজ উড়ে যাওয়াতেই ওই বিপত্তি ঘটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ১৭:০০
Share: Save:

বন্ধুদের আব্দার রাখতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের৷ রবিবার বিকালে ট্রান্সফর্মারের ফিউজ সারাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হন ময়নাগুড়ির জোড়পাকরির বাসিন্দা গোপাল রায় (২৪)৷ সোমবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।

টিভিতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে হবে। অথচ রবিবার দুপুর থেকেই এলাকা ছিল বিদ্যুৎহীন। রাস্তার পাশে ট্রান্সফর্মারের ফিউজ উড়ে যাওয়াতেই ওই বিপত্তি ঘটে। অভিযোগ, ইলেকট্রিকের কাজ না জানা সত্ত্বেও গোপালের দুই বন্ধু তাঁকে ওই ট্রান্সফর্মার মেরামতির জন্য বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ফিউজ ঠিক করতে উঠেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মারাত্মক জখম হন গোপাল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে প্রথমে ময়নাগুড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানেই মারা যান তিনি।

জানা গিয়েছে, দুই ভাইয়ের মধ্যে গোপালই ছিল বড়। চাষের কাজ করেন তাঁর বাবা। গোপাল নিজেও চাষের কাজে বাবাকে সাহায্য করতেন৷ বাড়িতে বাবা মা ছাড়াও গোপালের কাকারাও রয়েছেন৷ গোপালের এক কাকা কার্তিক রায় জানান, ‘‘ বিকেল চারটে নাগাদ আচমকাই গোপালের দুই বন্ধু মোটর সাইকেলে এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায়৷ আমি তখন খাচ্ছিলাম৷ কিছুক্ষণ পর শুনি, ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়েছে৷ তারপরই জানতে পারি, ট্রান্সফর্মারের ফিউজ উড়ে যাওয়াতেই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না৷ আর গোপালের বন্ধুরা তা ঠিক করাতেই গোপালকে নিয়ে গিয়েছিল৷’’

গোপালের এক কাকা রমেশ রায় বলেন, ‘‘খেলা দেখতে খুবই ভালবাসতো গোপাল৷ পাড়ার বন্ধুরা মিলে কোনও একজনের বাড়িতে বসে একসঙ্গে খেলা দেখতো৷ কিন্তু লোডশেডিং থাকায় রবিবার খেলা দেখতে পারছিল না তারা৷ আগে জানতাম না যে আগেও কয়েকবার ট্রান্সফর্মারের ফিউজ সারাতে উঠেছিল ও। এ দিন একই কাজ করতে গিয়ে এ ভাবে বিপদ ডেকে আনল।’’

গোপালের বন্ধুদের সঙ্গে অবশ্য এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি৷ গোপালের বাড়ির সদস্যরা জানান, তাঁরাও চেষ্টা করে ওই দু’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি৷

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই রাস্তার পাশে থাকা ওই ট্রান্সফর্মারের ফিউজ উড়ে যায়৷ বিদ্যুৎ দফতরকে বারবার বলেও কোনও কাজ হয় না৷ বিদ্যুৎ দফতর যদি বিষয়টি দেখতো তাহলে এই ঘটনা ঘটত না৷ তবে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক৷ ওই এলাকাতে এ দিনও বিদ্যুৎ কর্মীরা গিয়েছিলেন৷ কিন্তু সেখানে যে এমন সমস্যা মাঝেমধ্যে হয় তা কেউ তাদের জানাননি৷ এমনকি রবিবারও যে ওই ট্রান্সফর্মারে সমস্যা হয়েছে বা এলাকায় লোডশেডিং হয়েছে তা দফতরের কাউকে জানানো হয়নি৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE