Advertisement
E-Paper

শহরে প্রাণ কাড়ল কম্পন

আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে যান অনেকে। শুরু হয়ে যায় শাঁখ, ঘণ্টা, উলুধ্বনি। সকালে স্কুলে  যাওয়ার সময় ভূমিকম্পের ফলে পড়ুয়ারা ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। শেখানে স্কুল চলছিল সেখানে ক্লাস ছেড়ে বাইরে ভিড় করে পড়ুয়ারা। খুদেরা কোথাও কোথাও কান্নাও জুড়ে দেয় বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০২
হাহাকার: সিঁড়ি থেকে পড়ে মারা গিয়েছেন সম্রাট দাস। শোকে কাতর তাঁর বাবা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

হাহাকার: সিঁড়ি থেকে পড়ে মারা গিয়েছেন সম্রাট দাস। শোকে কাতর তাঁর বাবা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

এমনিতেই চার দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে নাজেহাল শিলিগুড়ি। তার উপরে বুধবার সকালে ভূমিকম্পের জেরে আতঙ্কিত গোটা শহর। ভূমিকম্পের অভিঘাতে ঘরদোরের সেরকম বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কিন্তু, মধ্য শান্তিনগরে একজনের প্রাণহানি হয়েছে। সম্রাট দাস নামে ২৪ বছরের এক যুবক দোতলা থেকে নামতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে জ্ঞান হারান। পরে নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় গোটা শহরেই নেমেছে শোকের ছায়া।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। উৎসস্থল শিলিগুড়ি থেকে অনেক দূরে হলেও শহরে তীব্র ঝাঁকুনি টের পাোয়া গিয়েছে। আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে যান অনেকে। শুরু হয়ে যায় শাঁখ, ঘণ্টা, উলুধ্বনি। সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় ভূমিকম্পের ফলে পড়ুয়ারা ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। শেখানে স্কুল চলছিল সেখানে ক্লাস ছেড়ে বাইরে ভিড় করে পড়ুয়ারা। খুদেরা কোথাও কোথাও কান্নাও জুড়ে দেয় বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূমিকম্পের সময়ে সেবক রোডের একটি বহুতলের পাশের বাড়িতে ফাটল দেখা যায়। শহরের বেশ কিছু আবাসনেও ফাটল দেখা দিয়েছে। হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বর্ধমান রোডে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীরা অনেকে দোকান ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে যান। লাগোয়া হোটেল থেকেও নেমে আসেন পর্যটকরা।

শিলিগুড়ি হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়ায়। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ প্রেম দোরজি ভুটিয়া বলেন, ‘‘ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা বলেই বাসিন্দাদের বাড়তি সচেতন থাকতে হবে। ভূমিকম্প হলে কী করণীয় তা সবাইকে বোঝাতে হবে। রোগীরা যাতে ছোটার চেষ্টা না করেন, সে জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ জরুরি।’’

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক রঞ্জন রায় বলেন, ‘‘দার্জিলিং, সিকিম ও লাগোয়া সমতল এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। সে জন্য এ সব জায়গায় ভূমিকম্পে ক্ষতি খুবই কম হবে এমন নকশায় বাড়ি বানানো উচিত। সেই নিয়ম মানা হয় কি না তা পুলিশ-প্রশাসন ও পুরসভাকে দেখতে হবে।’’

তিনি জানান, অতীতে চিলিতে ভূমিকম্পে প্রচুর ঘরদোরের ক্ষতি হতো, প্রাণহানি হতো। কিন্তু, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে নির্মাণ হওয়ায় সেখানে ক্ষতি আগের তুলনায় বহু গুণ কমে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন রঞ্জনবাবু। গত ৮ বছরের মধ্যে একাধিকবার ভূমিকম্পে কেঁপেছে শিলিগুড়ি। এ দিনের ফের কম্পনে অনেকের মনেই ফিরে এসেছে পুরনো স্মৃতি।

Earthquake Assam Death Siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy