গলা কেটে এক কংগ্রেসকর্মীকে খুনের ঘটনায় জড়াল পুলিশকর্মীর নাম। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের আঙ্গারমনি এলাকায় এই ঘটনায় নিহতের নাম ভবতোষ সাহা (৩৪) ওরফে বাবলা। শুক্রবার ভরসন্ধ্যায় রাস্তার উপরে ওই ঘটনার পরে গোটা এলাকাজুড়েই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। নির্বাচনের মুখে গোলমাল এড়াতে ঘটনার পর থেকেই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার সকালে নিহতের পরিবারের তরফে ১৯ জন প্রতিবেশীর নামে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়। কলকাতা পুলিশে কর্মরত রন্তু দাস ছাড়াও রাজ্য পুলিশে কর্মরত এক পুলিশকর্মীর বাবা সুনীল দাসও কোপানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। শনিবার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে পুলিশ ধরলেও বাকিরা এখনও অধরা।। শনিবার সকালে ঘটনার তদন্তে এলাকায় যান এসডিপিও। নিহত ভবতোষ কংগ্রেসকর্মী হলেও এতে রাজনীতি নেই বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় কীর্তনের অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতিবেশীদের মধ্যে বিবাদ বাধে। বাবলারা পৃথক মন্দির গড়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি জমি কেনার জন্য প্রতিবেশী বাপি দাসকে এক লক্ষ দশ হাজার টাকা দেয় বাবলা। কিন্তু বাপি বাবলাকে ঠকিয়ে তার টাকায় জমিটি বিপক্ষকে কিনে দেয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ। সেই টাকা ফেরত ঘিরেই ফের বিবাদ বাধে। দিন কয়েক আগে বিষয়টি নিয়ে মীমাংসায় বসেন বাসিন্দাদের একাংশ। সেখানে দু দফায় টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নিহতের পরিজনেদের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম দফার ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে বাবলাকে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী ইন্দ্রজিত দাস, রন্তু দাস ও সুনীল দাস। সঙ্গে যায় খুড়তুতো ভাই পূর্ণও। কিন্তু বাড়ির অদূরেই বাবলা ও পূর্ণকে বিপক্ষের লোকজন ঘিরে ধরে। বচসার সময় আচমকাই প্রত্যেকের কোমরে গুঁজে রাখা হাঁসুয়া বের করে তাকে কোপাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। হাঁসুয়া দিয়ে বুকে, পেটে, হাতে এলোপাথাড়ি কোপানোর পর তার গলা কেটে দেওয়া হয়। দাদাকে চোখের সামনে কোপাতে দেখে কোনওক্রমে পালায় পূর্ণ। তার চিত্কারে ছুটে আসেন নিহতের স্ত্রী ললিতাদেবীও। কিন্তু তাঁর সামনেই বাবলাকে কুপিয়ে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। চাঁচল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই বাবলার মৃত্যু হয়। ভাই পূর্ণর অভিযোগ, ‘‘ইন্দ্রজিৎ, পুলিশকর্মী রন্তু, সুনীল ও কান্তি দাসরা দাদাকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপাচ্ছিল। বাকিরা ঘিরে রেখেছিল। ওরা আমাকে ও দাদাকে পরিকল্পনা করেই খুন করতে চেয়েছিল। আমি কোনও রকমে পালিয়ে আসি।’’
খুনে অভিযুক্তদের মধ্যে বাপিও রয়েছে। যদিও ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে রন্তুর পাশাপাশি বাপির পরিজনেরাও। রাতে নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে হাসপাতালে যান চাঁচলের কংগ্রেস প্রার্থী আসিফ মেহবুব। আসিফ বলেন, ‘‘এতে রাজনীতি নেই। পুলিশ নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy