তদন্ত: ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। সোমবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
যে দল ক্ষমতায় তাদের সঙ্গেই থাকতেন শিলিগুড়ির টিকিয়াপাড়ার গোপাল ঘোষ ওরফে বাউ। এমনই জানাচ্ছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। বছর দু’য়েক আগে তাকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছিলেন খোদ মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর অভিযোগ ছিল, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের বাউ হুমকি দিয়ে শূন্যে গুলি চালিয়ে বেড়াচ্ছে। খোদ তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু, কয়েকদিনের মধ্যে থানার বদলে বাউকেই দেখা যায় তৃণমূল শিবিরে। তার সঙ্গী লাটুয়া বা মহম্মদ মুখতারও বিজেপি ছেড়ে চলে আসেন শাসক দলে।
সেই বাউকেই সোমবার ভরদুপুরে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। বেলা ১২টা নাগাদ শিলিগুড়িতে মহাবীরস্থান রেলগেট এলাকায় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। নার্সিংহোমে মারা যান তিনি।
এলাকার অনেকেই জানান, টিকিয়াপাড়ার বস্তির বাইরে রেলগেট, উড়ালপুলের নীচের এলাকার নিয়ন্ত্রণ সম্প্রতি চলে এসেছিল বাউয়ের হাতে। গজিয়ে উঠে নতুন ‘ফ্যান্সি বাজার’। বাজার বেআইনি বলে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন মেয়র তথা বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। মেয়র বলেন, ‘‘বেআইনি বাজার বসিয়ে টাকা আদায়, তোলাবাজি হয়। নিহত নানা মামলা অভিযুক্ত শুনেছি। আবার অভিযুক্তরাও সমাজবিরোধী। সরকারকে চিঠি দিয়েছি, পুলিশকে বলেছি। কিছু হয়নি। যা হল তা শহরে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।’’ তবে দল বদলের প্রসঙ্গে অশোকবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরা ও সব প্রশয় দিইনি বলেই তো এরা তৃণমূলে। আমাদের দলও ভেঙেছে।’’
ব্যবসায়ীরা জানান, উড়ালপুলের নীচে বিরাট বাজার। সেখানকার টাকা ভাগাভাগি নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। পুলিশ জানিয়েছে, বাউয়ের নামে শিলিগুড়ি থানায় অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। হুমকি, মারধর, তোলাবাজি-সহ নানা অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবি, ‘‘একাধিক রাজনৈতিক নেতা বাউকে ব্যবহার করেছেন। তাই খুন হয়েছেন বাউ।’’ যা শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘অনেকেই তো তৃণমূল করে। তা বলে দল কোনও অসামাজিক কাজে প্রশ্রয় দেয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy