অণ্বেষা চন্দ। ছবি: সব্যসাচী ঘোষ।
মালবাজার থেকে মাধ্যমিকে মোট ৬৭৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম হল অণ্বেষা চন্দ। মালবাজারের সুভাষিণী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী অন্বেষার বাড়ি মালবাজার শহরের উত্তর কলোনিতে। ফল ঘোষণায় উৎকণ্ঠা থাকলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই টিভি চ্যানেলে নিজের নাম দেখে চমকে যায় অণ্বেষা। এর পরেই একের পর এক ফোনে শুভেচ্ছা আসতে থাকে চন্দ পরিবারের কাছে। বাবা দিলীপকুমার চন্দ এবং মা রীনা চন্দের দুই মেয়ে। অণ্বেষা ছোট। দিদি প্রিয়াঙ্কা শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। বাবা দিলীপবাবু মালবাজার থেকে আট কিমি দূরের নেপুচাপুর চা বাগানের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী। মা রীণাদেবী নেপুচাপুর বাগানের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা।
ছোটবেলা থেকেই মালবাজারেই পড়াশুনো অণ্বেষার। শহরের কিশলয় স্কুল থেকে নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি অবধি পড়াশুনো করে মালবাজারের সুভাষিণী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয় সে। স্কুলে কখনো দ্বিতীয় হয়নি। অণ্বেষা ছবি আঁকতে আর গল্পের বই পড়তে দারুণ ভালবাসে। তবে সে যে রাজ্যের মেধা তালিকায় উঠে আসবে তা আন্দাজ করতে পারেনি অণ্বেষা নিজেও। তার কথায়, “জেলায় ভাল ফল করব ভেবেছিলাম। কিন্তু রাজ্যের দশম হতে পারব তা ভাবিনি।” বাবা দিলীপবাবু বললেন, “মেয়ে বরাবরই মেধাবী, অঙ্কে দু’জন ও ইংরাজির জন্যে একজন গৃহশিক্ষক ছিলেন। স্কুলের দিদিমণিরা রাজ্যের প্রথম কুড়িতে স্থান পাবে বলেও আশাবাদী ছিলেন। তবে এতটা ভাল ফল হবে তাও ভাবিনি।”
অন্বেষার মা রীণাদেবী জানান, মেয়ে মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় ৬৬৭ নম্বর পেয়েছিল। সে সময়ই ভাল ফল হতে পারে বলে ভেবেছিলাম। তবে মেয়ে পড়ার জন্যে খুব বেশি সময় দিত না। পরীক্ষার আগেও মেয়েকে ফেলুদা সিরিজ পড়তেও তিনি দেখেছেন বলে জানান। অণ্বেষা এ বারে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে ডাক্তার হতে চায় বলে জানিয়েছে।
মালবাজার শহরেরই আদর্শ বিদ্যাভবনেই অণ্বেষা ভর্তি হওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। হিন্দি সিনেমার ভক্ত অণ্বেষা বইয়ে সব সময় ডুবে থাকে না। জানালেন তার আত্মীয় প্রতিবেশীরাও। অণ্বেষার এক আত্মীয়া তথা প্রতিবেশী বিউটি চন্দের কথায়, “অণ্বেষা প্রতিদিনই গল্প করতে আসত। টিভি দেখতেও আগ্রহ রয়েছে ওর।”
অণ্বেষার ভাল ফলে উচ্ছ্বসিত মালবাজারের সুভাষিণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা করবী দাস। তিনি বলেন, “মফস্সল থেকে রাজ্যে দশম আমাদের স্কুলে আগে কেউ হয়নি। আমরা অণ্বেষার ফলে অভিভূত।” অণ্বেষার ফলের কথা শুনেই দুপুরেই তাদের বাড়িতে যান মালবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা। পুরসভার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান স্বপনবাবু।
মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি বলেন, “অণ্বেষা মেধা তালিকায় পৌছে মালবাজার মহকুমাকেও গর্বিত করেছে।” অন্বেষার প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৯০ , ইংরাজীতে ৯৪ , অঙ্কে ৯৯ , ভৌতবিজ্ঞানে ৯৮, জীবনবিজ্ঞানে ১০০ , ইতিহাসে ৯৫ ও ভূগোলে ৯৭।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy