Advertisement
১১ মে ২০২৪
বিশ্ব শৌচাগার দিবস

অনুষ্ঠানের জন্য রাতারাতি শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ

বিশ্ব শৌচাগার দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল জনা পঞ্চাশেক পড়ুয়া। তাদের কার কার বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে মঞ্চ থেকেই জানতে চেয়েছিলেন মহকুমা শাসক। পড়ুয়াদের মধ্য থেকে মাত্র তিনটি হাত ওঠে। অস্বস্তিতে পড়তে হয় মহকুমা শাসককে। পরে অবশ্য তিনি বলেন, “গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে।”

অভিজিত্‌ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫২
Share: Save:

বিশ্ব শৌচাগার দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল জনা পঞ্চাশেক পড়ুয়া। তাদের কার কার বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে মঞ্চ থেকেই জানতে চেয়েছিলেন মহকুমা শাসক। পড়ুয়াদের মধ্য থেকে মাত্র তিনটি হাত ওঠে। অস্বস্তিতে পড়তে হয় মহকুমা শাসককে। পরে অবশ্য তিনি বলেন, “গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে।”

মালদহের হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতকে আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ‘নির্মল গ্রাম’ ঘোষণার প্রস্তুতি শুরু করেছে মালদহের জেলা প্রশাসন। তাই বুধবার এই গ্রামেই আয়োজন করা হয়েছিল বিশ্ব শৌচাগার দিবসের অনুষ্ঠানের। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী, অতিরিক্ত জেলাশাসক অমলকান্তি রায় এবং সদর মহকুমা শাসক নন্দিনী সরস্বতী কিন্তু যে গ্রামে অনুষ্ঠান, সেই ফিল্ড পাড়ার অধিকাংশ বাড়িতেই শৌচাগার নেই বলে জানা গিয়েছে। যদিও, বিশ্ব শৌচাগার দিবসের অনুষ্ঠান এই গ্রামে হবে বলে স্থির হওয়ার পরে, ‘মুখরক্ষা’র জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ সরকারি কর্মীরা আসরে নামেন বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। অনুষ্ঠানের আগের রাতে অর্থাত্‌ মঙ্গলবার গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে শৌচাগার তৈরির জন্য নাম নথিভুক্ত করে, ৯০০ টাকা করে সংগ্রহ করেন তাঁরা। অন্তত ৩০টি বাড়ি থেকে টাকা সংগ্রহ হয়েছে বলে জানা দিয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী উপভোক্তাদের থেকে ৯০০ টাকা নিয়ে ১০ হাজার টাকার শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়।

আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান দীপক সাহাও ফিল্ডপাড়ার বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে প্রধান নিজেই সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে বাসিন্দারা দাবি করেছেন। যদিও প্রধান বলেন, “স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে গ্রামে শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে। প্রশাসনের নিয়ম মেনেই কাজ হচ্ছে। অনুষ্ঠানের আগের দিন তড়িঘড়ি কাজ শুরু করার অভিযোগ ঠিক নয়।”

যদিও, শৌচাগার তৈরি নিয়ে ক্ষোভ দানা বেধেছে প্রধানের এলাকাতেই। গ্রামের একশো বাড়ির কোনওটিতেই পাকা শৌচাগার নেই বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের বক্তব্য, সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকরা গ্রাম পরিদর্শনে গেলে বেকায়দায় পড়বেন, এই আশঙ্কাতেই মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে শৌচাগার তৈরির জন্য নাম নথিবদ্ধ করেছেন। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এর আগে শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। সেই সঙ্গে যে কাজ হয়েছে তাও নিম্নমানের বলে অভিযোগ।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে এখনও গ্রামের ন’শোরও বেশি বাড়িতে শৌচাগার নেই। এ দিন যে এলাকায় অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানরই বাসিন্দা অনিতা সরকার, সুরেন সিংহ, লক্ষ্মীরানী সিংহদের অভিযোগ, এর আগে শৌচাগারের জন্য একাধিকবার পঞ্চায়েত দফতরে গিয়েছেন তাঁরা। কোনও ফল হয়নি। এ দিন সরকারি অনুষ্ঠান হবে জেনেই, মঙ্গলবার রাতে প্রধান সহ সরকারি কর্মীরা এসে নাম লিখিয়ে টাকা নিয়ে গিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abhijit saha malda world toilet day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE