ধূপগুড়ি-কাণ্ডে নিহত ছাত্রীর পরিবারকে পাড়ায় ফিরিয়ে আনতে এ বার উদ্যোগ নিলেন পড়শিরাই।
পরিবারটি যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে, সে ব্যাপারে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের কাছে সরাসরিই আবেদন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে সোমবারেও ওই ছাত্রীর পরিবার কয়েক কিলোমিটার দূরে মামাবাড়ি ছেড়ে ধূপগুড়ি শহরে ফিরতে ভরসা পাননি। অভিযোগ, শাসকদলের একাংশের চাপেই তাঁদের ভিটেছাড়া হতে হয়েছে। প্রচ্ছন্ন হুমকিতেই যে তাঁরা ফিরতে পারছেন না, পাড়ার অনেকের কাছেই তা-ও স্পষ্ট। ওই ছাত্রীর দাদু অবশ্য বলেন, “এখনও ওদের বাড়ি ফেরার মতো অবস্থা নেই। তাই আপাতত আমাদের এখানেই থাক।” তবে ধূপগুড়ির ওই পাড়ার প্রতিবেশীরা জানান, পুুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেই ওই পরিবারটি কিন্তু বাড়ি ফিরতে পারত।
পুলিশি তদন্ত নিয়েও বাসিন্দাদের ক্ষোভ রয়েছে। ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং খুনে অভিযুক্তদের অনেকেই এলাকায় রয়েছেন বহাল তবিয়তেই বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। পাড়ায় ‘বুক ফুলিয়ে’ ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও নিজেদের বাড়িতেও অভিযুক্তেরা নিয়মিত যাতায়াত করছেন বলেও জানা গিয়েছে। পুলিশ অবশ্য তাদের কাউকেই ‘খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না’ বলে জানিয়ে দিয়েছে। শিলিগুড়ির রেল পুলিশ সুপার দেবাশিস সরকারকে এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
সিপিএম, বিজেপি-সহ বিরোধী দল তো বটেই, এলাকার সাধারণ বাসিন্দা, ছাত্রছাত্রীদের প্রায় সকলেই পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন। এমনকী, পুলিশের অন্দরেও অফিসারদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। তবে সোমবার সুরেন বর্মন ও পরিমল বর্মন নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাদের কোথা থেকে ধরা হয়েছে, তা নিয়ে রেল পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। অভিযুক্তদের তালিকায় দু’জনেরই নাম ছিল। কিন্তু বাকিরা, তাদের অনেকেই তো পাড়ায় রয়েছে? পুলিশের কাছে এর কোনও জবাব মেলেনি।
ধৃত পরিমলের বাবা অনিলবাবুর সঙ্গে বিবাদের জেরে ১ সেপ্টেম্বর রাতে সালিশি সভা ডেকে ছাত্রীর বাবাকে হেনস্থা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেখানে ছাত্রীর বাবাকে মারধর ও হেনস্থা করলে প্রতিবাদ করেছিল ছাত্রীটি। ওই সময়ে তাকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই তার উপরে থুতু চাটানোর ফতোয়া জারি করা হয়। পরের দিন রেল লাইনের পাশে তার দেহ মেলে। ছাত্রীর বাবা জানান, ওই দিন ভোরে জঙ্গলে মেয়ের পোশাকের অংশ পড়ে থাকতে দেখেছেন। তাঁর প্রশ্ন, “কোথাও কেউ শুনেছেন, আত্মহত্যার আগে কোনও মেয়ে সব পোশাক খুলে রাখে? আমার মেয়ের চুল উপড়ে নিয়েছে ওরা। এ রাজ্যে কি পুলিশ-প্রশাসন বলে কিছু নেই?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy