Advertisement
২২ মে ২০২৪

আইএনটিইউসি দফতর ভাঙচুর

মদের ঠেক চলার অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসির শাখা অফিস সহ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালালেন বাসিন্দাদের একাংশ। মঙ্গলবার সকালে চাঁচলের হাটখোলা মোড় এলাকার ঘটনা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পরেই এলাকায় মদ্যপদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়।

ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের জমায়েত। চাঁচলে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের জমায়েত। চাঁচলে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১১
Share: Save:

মদের ঠেক চলার অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসির শাখা অফিস সহ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালালেন বাসিন্দাদের একাংশ। মঙ্গলবার সকালে চাঁচলের হাটখোলা মোড় এলাকার ঘটনা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পরেই এলাকায় মদ্যপদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়। সোমবার রাতেও এমনই একটি ঘটনা থেকে ঘটনার সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। চাঁচল থেকে সিহিপুরে ফেরার সময় নজরুল শেখ নামে এক যুবককে এক মদ্যপদের আচরণের প্রতিবাদ করলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার বাসিন্দারা এসে অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম দুলাল শেখ। রাতের বেলায় এই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা মঙ্গলবার সকালে মদের ঠেক চলার অভিযোগে আইএনটিইউসি অফিস সহ পাশের কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালান।

হাটখোলা মোড় এলাকায় একাধিক মদের ঠেক চলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। চায়ের দোকান, সিমেন্টের দোকান এমনকী মুদি দোকানেও মদের অবৈধ ঠেকের অভিযোগ চলে বলে অভিযোগ। তবে কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের অফিসে মদের ঠেক চলার অভিযোগ ওঠা এলাকায় প্রথম। ওই শ্রমিক সংগঠনের অফিসে মদ, গাঁজার ঠেক চলত বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই অফিস থেকে নেশার সামগ্রী বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাটখোলায় চৌরাস্তার মোড়ে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে আইএনটিইউসির অফিস সহ স্বরুপগঞ্জগামী রাস্তার ধারে একাধিক একচালার ঘরে সারাদিন ধরে মদ ও গাজার ঠেক চলে বলে অভিযোগ। সন্ধ্যা নামলেই সেখানে দুষ্কৃতীরাও ভিড় জমায়। তার জেরে ছিনতাই সহ নানা অসামাজিক কাজকর্মও চলে বলে অভিযোগ। মদ্যপদের দৌরাত্ম্যে এলাকা দিয়ে মহিলারা তো বটেই পুরুষরাও একলা যেতে সাহস পান না বলে বাসিন্দাদের দাবি।

মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দোপাধ্যায় বলেন, “শহরের মধ্যে কীভাবে মদ সহ মাদকের ঠেক চলছিল তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

যদিও সংগঠনের জেলা সভাপতি কাজি নজরুল ইসলাম সংগঠনের অফিসে মদের আড্ডার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা দাবি করে বলেন, “এমন ঘটনা ঘটতেই পারে না। কোনকারণে মিথ্যে অভিযোগে কেউ কেউ অফিসে ভাঙচুর করেছে।” তবে সংগঠনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অফিসে মদের আড্ডা চলার অভিযোগ ওঠায় খোঁজখবর শুরু হয়েছে। ওই এলাকায় সংগঠনের দায়িত্বে থাকা চাঁচল-১ ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জহিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ খোঁজ নিয়ে দেখছি। যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রমাণিত হলে, সংগঠনের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।” সংগঠনের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই অফিসটি নেহাতই শাখা স্তরের। সংগঠনের নেতারা নিয়মিত অফিসে যেতেন না বলেও দাবি করা হয়েছে।

যে এলাকায় ভাঙচুর হয়েছে সেটি থানা লাগোয়া। থানার অদূরে হাটখোলা মোড়ে কী ভাবে দিনের পর দিন ওই ঠেকগুলি চলছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বছরখানেক আগে এলাকার বেশ কয়েকটি মদের ঠেকে স্থানীয় মহিলারা ভাঙচুর চালান বলে জানা গিয়েছে। তারপরেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণেই ফের এলাকায় ঠেক গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।

বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, একটি সিমেন্টের দোকানের পিছনেও ওই মদের ঠেক চলত। ওই ঠেকের পাশাপাশি সিমেন্টের দোকানেও এদিন ভাঙচুর চলে। দোকানের মালিক মানিক দাস পাল্টা দাবি করে বলেন, “এলাকায় আরও একাধিক ঠেক চলে। ক্ষুব্দ বাসিন্দারা ভুল বুঝে আমার দোকানেও ভাঙচুর চালান।” চাঁচল-১ ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, “এলাকায় মাদক বিক্রির কারবারের পাশাপাশি এলাকায় একাধিক ঠেক চলার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশকে একাধিকবার জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

intuc office chanchal rampage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE