Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আইপিএল ফাইনালে বাজি, বচসা থেকে গুলি করে খুন

আইপিএল ফাইনাল নিয়ে বাজি ধরাকে কেন্দ্র করে ‘বন্ধুদের’ বচসার জেরে এক ব্যক্তিকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে, গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম কার্তিক পাল (৩৮)। কার্তিকবাবুর এক বন্ধু এবং সেই বন্ধুর দুই শ্যালকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাতে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার বিদ্যাচক্র কলোনিতে ঘটনাটি ঘটেছে।

নিহতের শোকার্ত পরিজনেরা। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।

নিহতের শোকার্ত পরিজনেরা। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০১:৩৯
Share: Save:

আইপিএল ফাইনাল নিয়ে বাজি ধরাকে কেন্দ্র করে ‘বন্ধুদের’ বচসার জেরে এক ব্যক্তিকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে, গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম কার্তিক পাল (৩৮)। কার্তিকবাবুর এক বন্ধু এবং সেই বন্ধুর দুই শ্যালকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাতে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার বিদ্যাচক্র কলোনিতে ঘটনাটি ঘটেছে।

রবিবার সন্ধ্যায় এলাকার মাঠে একটি বড় স্ক্রিন লাগিয়ে আইপিএলের ফাইনাল দেখার আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় যুবকেরা। সেখানেই অটোচালক কার্তিকবাবু বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে খেলা দেখেছেন বলে জানা যায়। এক বন্ধুর সঙ্গে পাঞ্জাবের হয়ে তিনি বাজিও ধরেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। খেলা শেষ হওয়ার পর-পরই সেই বাজির টাকা জমা রাখা নিয়ে ওই বন্ধুর সঙ্গে বচসা বেধে যায় বলে অভিযোগ। বচসা থেকে শুরু হয় মারপিট। সে সময়েই মাঠের পাশে একটি গলির নর্দমায় কার্তিকবাবু ফেলে পর পর দু’টি গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোও হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে এলাকারই একটি নার্সিেংহামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কার্তিকবাবুর পেটে এবং ঘাড়ের নীচে দু’টি গুলি লেগেছে বলে পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। শিলিগুড়ির এডিসিপি সাভারি রাজকুমার বলেন, “কী কারণে মৃত্যু হয়েছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গুলি করা হয়েছিল কি না তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যাবে। তবে নিহতের শরীরে বেশ কয়েকটি ক্ষত চিহ্ন মিলেছে। যেগুলি আপাত ভাবে গুলির চিহ্ন বলে মনে হচ্ছে না। অভিযুক্তরা পলাতক।”

রবিবার সন্ধ্যায় খেলা শুরুর আগে মোবাইলে ফোন করে কার্তিকবাবুকে তাঁর বন্ধুরাই বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান বলে পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, খেলা শেষ হওয়ার পরেই বাজির টাকা নিয়ে কার্তিকবাবুর সঙ্গে তাঁর এক বন্ধুর বচসা শুরু হয়। সে সময় কার্তিকবাবুকে মারধরের অভিযোগও ওঠে। এরপরেই কার্তিকবাবু বাড়ি ফিরে একটি লোহার রড নিয়ে ফের বিদ্যাচক্র মাঠে চলে আসেন বলে অভিযোগ। সে সময়ে কার্তিকবাবুর স্ত্রী দীপালিদেবী এবং মা মায়াদেবীও তাঁর পিছু নিয়ে মাঠে চলে আসেন বলে জানা গিয়েছে। লোহার রড দিয়ে বন্ধুকে মারার পরে, ওই বন্ধুর দুই শ্যালক কার্তিকবাবুর উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তারাই ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার পরে দু’টি গুলিও ছোড়ে বলে অভিযোগ। নিহতের পরিবারের সদস্যদের বয়ান সংগ্রহ করেছে পুলিশ। পরিবারের তরফেও অভিযুক্তদের নাম দিয়ে থানায় ডায়েরি করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

কার্তিকবাবুকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁর বন্ধু নির্মাণ সামগ্রী ব্যবসায়ী। গোলমালের সময় তিনি ফোন করে তাঁর দুই শ্যালককে ডেকে আনেন বলে অভিযোগ। ওই দুই যুবকও নির্মাণ সামগ্রী সরবারহ করার কাজে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে এর আগে মারধর, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার বন্দুক থেকেই গুলি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। নিহতের স্ত্রী দীপালিদেবী বলেন, “খেলা শেষ হওয়ার পরে দৌড়ে বাড়ি ফিরে আসেন। তাঁর চোখে মুখে কালশিটের দাগ ছিল। এসেই বলল এক বন্ধু তাকে মারধর করেছে। বাড়ি থেকে একটা লোহার রড নিয়ে আবার বেরিয়ে যায়। আমরাও পেছনে ছুটতে থাকি।” কার্তিকবাবুর মা মায়াদেবী বলেন, “মাঠে গিয়ে দেখি অনেকে জড়ো হয়ে রয়েছে। কিছু দূরে তিনজন ওকে ফেলে মারধর করেছে। ওরাই গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।”

এ দিন দুপুরে অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা তো বটেই তাদের পরিবারের সদস্যরাও এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে। গুলি চালানোর বিষয়ে পুলিশের তরফে নিশ্চিত করে জানানো না হলেও, এ দিন সকালে ঘটনাস্থলের রক্তমাখা মাটি, বালি সংগ্রহ করেছে পুলিশ। গুলি চালানো হলে কোথা থেকে সেই বন্দুক এলো তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ipl final betting gun fire murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE