Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আগুন দেওয়ার ঘটনায় ৭ জনের নামে অভিযোগ

আদিবাসী পরিবারের ঘরে আগুন লাগানোয় সাত জনের নামে থানায় অভিযোগ করা হল। মৌখিক ভাবে জানালে ও, ঘরে আগুন দিয়ে তাঁদের উচ্ছেদের চেষ্টার ঘটনা নিয়ে থানায় জানানো অভিযোগে তৃণমূলের নাম উল্লেখ করল না আদিবাসী পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৭
Share: Save:

আদিবাসী পরিবারের ঘরে আগুন লাগানোয় সাত জনের নামে থানায় অভিযোগ করা হল। মৌখিক ভাবে জানালে ও, ঘরে আগুন দিয়ে তাঁদের উচ্ছেদের চেষ্টার ঘটনা নিয়ে থানায় জানানো অভিযোগে তৃণমূলের নাম উল্লেখ করল না আদিবাসী পরিবার।

বুধবার বিকেল আদিবাসী বিকাশ পরিষদ নেতৃত্বের অভিযোগ তোলেন, রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর চা বাগান সংলগ্ন কারজিপাড়া এলাকায় তৃণমূল সমর্থকরা আদিবাসীর জমি দখলের চেষ্টা করছে। জমি দখল করতে তৃণমূল বিধায়কের মদতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়। যদিও বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জ থানায় দায়ের করা অভিযোগে আদিবাসী পরিবার তৃণমূল সমর্থক এবং দলীয় বিধায়কের প্রসঙ্গ এড়িয়ে অগ্নিসংযোগ ও মারধরের ঘটনায় জড়িত বলে সাতজনের নাম উল্লেখ্য করেছে।

আদিবাসী বিকাশ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজু সাহানি অভিযোগ করে বলেন, “বিধায়কের মদতে তৃণমূলের লোকজন যে ঘরে অগুন দেয়, সেটা আমাদের কাছে পরিষ্কার। ওঁরা হয়ত ভয়ে আসল ঘটনা উল্লেখ করেনি।” ওই বিষয়ে মুখ খোলেননি পার্বতী ওঁরাও। বৃহস্পতিবার তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। শাসকদলের প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বলেন, “জমির মালিকানার সমস্ত নথি আমাদের আছে। আমাদের সব কিছু পুড়িয়ে তাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। পুলিশকে সাতজনের নাম জানিয়েছি। ওঁরা কোন দলের তা জানি না।” অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না এর পিছনে কে অথবা কারা ষড়যন্ত্র করছে।’ তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক খগেশ্বর রায় এ দিন বলেন, “ওখানে কেন আমরা হস্তক্ষেপ করতে যাব। অভিযুক্তদের কেউ আমাদের দলের নয়।”

আদিবাসী পরিবারের অভিযোগ, শিলিগুড়ির এক ব্যবসায়ী গত পুজোর সময় থেকে তালমা নদী সংলগ্ন কারজিপাড়ার প্রায় চার একর জমি থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবারের বড় মেয়ে পার্বতী দেবী অভিযোগ, গত ডিসেম্বর মাসে তাঁরা অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তবু কোন ফল মেলেনি। বুধবার ঘটনার পরে পুলিশে অভিযোগ জানান তিনি।

জমির মালিকানা নিয়ে অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের জেলা আদিকারিক সুজয় আচার্য স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, “গত বছর ৮ ডিসেম্বর অভিযোগ পেয়ে ভূমি ও রাজস্ব দফতরের কাছে জমির স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেটা এখনও আসেনি।” এদিকে অভিযুক্তদের আইনজীবী দীপঙ্কর ঘোষ আদিবাসী পরিবারের অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা দাবি করেন, ওই জমি তাঁর মক্কেলের রাইস মিল করার জন্য তিনি ২০১১ সালে লক্ষ্মী দাস নামে এক মহিলার কাছ থেকে কিনে নেন। জমি কেনার পর থেকে কয়েকজন ঝামেলা শুরু করেছে বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, “বিবাদ এড়াতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি দেওয়ানি আদালতে মামলা করা হয়েছে, আদালত জমির মালিকানা সম্পর্কে যে রায় দেবে সেটাই মেনে নেব। এছাড়াও হাইকোর্টে মামলা চলছে।” বুধবার ঘর জ্বালানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তাঁর দাবি, “ওই জমিতে বসত বাড়ি ছিল না সেখানে খরের গাদা, আবর্জনা ছিল। সেগুলি কেউ পুড়িয়ে দেয়। এর পরে জমির প্রকৃত মালিক, কেয়ারটেকার, শ্রমিক, এমনকি আমাকেও মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jalpaiguri fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE